ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: করোনা পরিস্থিতির কারনে টানা ১০২ দিন বন্ধ থাকার পর সাতক্ষীরা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্তদের আত্নসমর্পণ। গত ৪ জুলাই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি জারীর পর সামগ্রীক বিষয় সঠিকভাবে প্রতিপালন করতে গতকাল সকালে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এর অফিস কক্ষে এক জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবীর সহ ম্যাজিস্ট্রেসীর সকল বিচারকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোঃ আলী আকবর, রেজিস্টার জেনারেল, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগ (বিচার শাখা) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি এবং শারিরিক ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করে ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিগন তাদের নিয়োজিত আইনজীবীর মাধ্যমে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সহ অধীনস্ত সকল আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পনের আবেদন করতে পারবেন। আদালত প্রাঙ্গণে এবং আদালত ভবনে কোনরূপ জনসমাগম যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। আদালত প্রাঙ্গণে এবং এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে কমপক্ষে ছয় ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। আত্মসমর্পণকারী অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে সর্বোচ্চ ২ জন আইনজীবী শুণানীতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং এজলাস কক্ষে একত্রে ৬ জনের অধিক লোকের সমাগম করা যাবে না। আত্মসমর্পণকারীর দরখাস্ত শুণানীর সময় আত্মসমর্পণকারী অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং তার নিযুক্ত আইনজীবী ব্যতীত অন্য কোন আইনজীবী এজলাস কক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না। এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে অবশ্যই মা´ পরা অবস্থায় থাকতে হবে। আদালতের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আইনজীবীদেরকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান জানান, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেসীর সকল বিচারকগনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির এই পিক আওয়ারে আমাদেরকে জনসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করতে হবে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবীর দৈনিক পত্রদূতকে জানান, রোববার থেকে সীমিত আকারে আত্মসমর্পনের কিছু দরখাস্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, আজ সোমবার থেকে ম্যাজিস্ট্রেসীর সকল আদালতে ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন গ্রহণ করা হবে, তবে সবকিছুই হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. এম শাহ আলম দৈনিক পত্রদূতকে জানান, বারের আইনজীবীদেরকে নোটিশ দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোর্ট করতে হবে এবং মোয়াক্কেলদেরকেও বিষয়টি অবহিত করতে হবে। এছাড়া বিনা কারনে কোন আইনজীবী সহকারী যাতে আদালত প্রঙ্গণে বা এজলাস কক্ষে ভীড় না করেন সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কারনে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশের সকল আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থগীত হয়ে যায় এবং বন্ধ থাকে ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্তদের স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পনের বিষয়টি। পরবর্তীতে হাজতী আসামীদের জামিনের আবেদন শুণানী শুরু হলেও বন্ধ থাকে আত্মসমর্পণের বিষয়টি। ফলে ফৌজদারী মামলার অভিযুক্ত/আসামীদের করোনা মহামারী পরিস্থিতির মধ্যেও দীর্ঘ দিন পলাতক থাকতে হয়েছে। সর্বশেষ আইনজীবীদের দাবী এবং অভিযুক্তদের বিষয়টি বিবেচনা করে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির নির্দেশক্রমে জারী করা হল নির্দেশনাটি।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …