কালিগঞ্জে সিদ্দিক মেম্বরের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আবারও সাংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টারঃ
কালিগঞ্জ উপজেলা এলাকার বহুল বিতর্কিত, সমালোচিত, মামলাবাজ সিদ্দিক মেম্বরের নানান অনিয়ম, দূর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি, সরকারি মালামাল আত্মসাত, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ পাঁচ বছরে কোটিপতি হওয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তার হীন কর্মকান্ডের প্রতিবাদে রবিবার (১২ জুলাই) বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিষ্নুপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী আবুল বাসার বলেন ইতিপুর্বে দুর্ণীতি দমন কমিশন, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করা আছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে দুর্ণীতিবাজ মেম্বরের বিরুদ্ধে আজও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইতিপুর্বে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগে তথ্য প্রমান দিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন ও এলাকায় মানববন্ধন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কথিত শক্তির জোরে বহুল বিতর্কিত সিদ্দিক মেম্বর বহাল তবিয়তে রয়েছে। শাস্তি না পাওয়ায় বেপরোয়া হয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চলেছে তার অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় একান্ত নিরুপায় হয়ে আজ ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী আবুল বাসার মোড়লসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের নিয়ে আপনাদের সন্মুখে হাজির হয়েছি। জাতীর বিবেক আপনাদের লিখনীর মাধ্যমে যেনো দুর্ণীতিবাজ, সন্ত্রাসী, অন্যের অর্থ আত্মসাতকারীদের মুখোশ খুলে যায় এবং আইনে শাস্তি পায় সে আসায় আমরা বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীগন হাজির হয়েছি। আমরা আপনাদের লিখনীর মাধ্যমে বহুল বিতর্কিত, দুর্ণীতিবাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননাকারী ও বহু অপকর্মের হোতা সিদ্দিক মেম্বরের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ ও প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। কালিগঞ্জ উপজেলার ২ নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও শ্রীধরকাঠী গ্রামের মৃত নেফু শেখের পুত্র সিদ্দিকুর রহমান শেখ ৪নং ওয়াডের মেম্বর। জনগন চেয়েছিল এবার অন্তত ভাল হয়ে এলাকার জনগনের কল্যাণে কাজ করবে কিন্তু এলাকাবাসী বুঝতে পেরেছে যে, সে জনগনের কল্যাণে নয়, মেম্বর হয়ে অবৈধ উপয়ে গরীবের হক নষ্ট করে নিজেই কোটিপতি হয়েছে। নানান অনিয়ম আর দূর্ণীতি করে তিনি আখের গুছিয়েছে নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য। যার কিনা ছোট্ট একটি মুদি দোকান করে কোন রকম সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো, সেখানে আজ তিনি পাঁচ বছরের ব্যবধানে আলিশান বাড়ি, গাড়ী আর নামে বে-নামে হয়েছে অঢেল সম্পদের মালিক । দুর্ণীতিবাজ এই সিদ্দিক মেম্বরের বিরুদ্ধে সত্য বলার পাশাপাশি তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবীতে আজকের সাংবাদিক সম্মেলন । তার বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার দুস্থদের ঘর দেওয়ার নাম করে নগদ টাকা নেওয়া, রেশন কার্ডের মাল আত্মসাত, মৃত ব্যাক্তির ভাতার টাকা উত্তোলন, ভারতে অবস্থানকারীর কার্ডের মাল আত্মসাত, স্বজনপ্রিতি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করা, স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের নামে কার্ড দেওয়া, প্রকল্পের কাজে অনিয়ম সহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রয়েছে। সে একজন ভয়ঙ্কররুপী, তার বিরুদ্ধে সহজে কেহ মুখ খুলতে সাহস পায়না। যখন তখন সন্মানী মানুষের অপদাস্থ করতে কুন্ঠিত হয়না সে। তার হীন অপরাধ উল্লেখ করে গত ২১/ ০৬/২০২০ তারিখে জেলা প্রশাসক ও দুর্ণীতি দমন কমিশনে ও ০১/০৬/২০২০ তারিখে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করা হয়। কালিগঞ্জ থানায় চলতি মাসেই মেম্বরের বিরুদ্ধে অর্ধডজন জিডি করা হয়। সে কারণেই মেম্বরসহ তার পেটুয়া বাহিনী লাঠি শোঠা নিয়ে ১২/০৬/২০২০ তারিখ সন্ধ্যায় অভিযোগকারীদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে অশ্রাভ্য ভাষায় গালিগলাজ করে জীবন নাশের হুমকী দেয় এবং পথেঘাটে একাকী পাইলে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়াসহ খুন গুম করবে বলে প্রকাশ্যে আস্ফালন করে। এ বিষয়ে মেম্বরের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। বর্তমানে তার ও তার পেটুয়া বাহিনীর ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি আমিসহ অনেকে। জানিনা সত্যকথা বলতে এসে সাতক্ষীরা থেকে সুস্থ শরীরে ভালভাবে পরিবারের মাঝে পৌছাতে পারবো কিনা! তবুও সত্যকথা বলতে হবে। দুর্ণীতিবাজ সিদ্দিক মেম্বরের নানাবিধ অপরাধের বিরুদ্ধে কথা বলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রশিদ কে প্রাণনাশের হুমকী দেয়। তার বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার নাম করে হোগলা গ্রামের মৃত মফিজ সানার পুত্র (ভ্যান চালক) হান্নান সানার নিকট থেকে ৫ হাজার ও রেশন কাড দেওয়ার নামে ২৫ শত টাকা, মোবারক সরদারের পুত্র শহিদ সরদারের নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়,মৃত সালাম মোড়লের পুত্র শাকের মোড়লের নিকট থেকে ঘর দেওয়ার নাম করে ৫ হাজার টাকা নেয়। এছাড়াও ছামসুর রহমান পিং আনছার মোড়ল, আসাদুজ্জামান ময়না পিং বাবু শিকারীসহ ১৫/১৬ জনের রেশন কাডের চাউল আত্মসাত করেছে। মেম্বর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে স্বামী স্ত্রী দুইজনকেই কার্ড দিয়েছে। যেমন আছমত মোড়লের নামে রেশনকাড স্ত্রী হাফিজার নামে, নুরুল সানার নামে রেশনকাড, স্ত্রী শেফালীর নামে শিশুকাড, সাইদুর মোড়লের নামে রেশনকাড স্ত্রীর নামে শিশুকাড, মৃত আবুবাক্কার মোড়লের স্ত্রী মাফুজা খাতুন থাকে বিদেশে, চাউল তুলে খায় মেম্বর। মুজিবর রহমানের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ও মৃত গোলাপ গাজীর পুত্র জলিল গাজীর ভাতার টাকা তুলে খায় মেম্বর। এমনিভাবে অত্র ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭/১৮ টি পরিবারে কার্ড দেওয়া হয়েছে। মেম্বরের একান্ত দোসর ধুরন্ধর আব্দুর রউপ মোল্যার (ডিলার) সহযোগিতায় ও যোগসাজসে গরীব ও অসহায়দের সরকারি বরাদ্ধকৃত অর্থ এবং মালামাল আত্মসাত করে আসছে। প্রত্যেকটি অভিযোগের সত্যতা আছে, এলাকায় তদন্ত করলে যথাযথ প্রমান মেলবে। আমার পাঠ করা কথাগুলো হুবহু আপনাদের পত্র, পত্রিকা, টিভি চ্যানেল, অনলাইনে ও ফেসবুকে প্রকাশ করে দুর্ণীতিবাজ সিদ্দিক মেম্বরের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনতে সহযোগীতার দাবী জানানো হয় লিখিত বক্তব্যে।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।