দ্বিতীয় দফা বন্যায় ১০ জেলা প্লাবিত লাখো মানুষ পানিবন্দি

ক্রাইমর্বাতা ডেস্করিপোট:  উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে দেশের সব নদনদীতে আবার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১০ জেলায় দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব জেলার নদনদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। ঘরবাড়ি ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রসহ নিরাপদ স্থানে ঠাঁই নিয়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে রাস্তাঘাট ও মাছের হাজার হাজার খামার। অনেক জেলায় বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। ডুবে গেছে ফসলের বিস্তীর্ণ ক্ষেত ও বীজতলা। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে দুর্গত এলাকার মানুষ।

অফিস, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর- রংপুর :তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে রংপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের একটি বাঁধের ১০০ ফুট ভেঙে গেছে।

ডালিয়া ব্যারাজ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিনভর ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার রাতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চর ইচলী, শংকরদহ, বাগেরহাট, জয়রাম ওঝা, চর চল্লিশাসালের প্রায় আড়াই  হাজার পরিবার; কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনার চরের প্রায় এক হাজার ৭০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনার চরের হুমায়ুনের বাঁধের একশ’ ফুট ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।

সিরাজগঞ্জ : যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে দ্বিতীয় দফা বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি ১২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। পানি বাড়লেও বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম শনিবার সকালে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র অনুযায়ী যমুনার পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ শহরের পাশের পয়েন্ট দিয়ে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ছাতকে এর চেয়েও বেশি উচ্চতায় বিপদসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৩৩ মিলিমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, উজানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় আরও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

গত তিন দিন ধরে সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে উজানে অর্থাৎ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সুনামগঞ্জে আবারও বন্যা হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়িতে আবার পানি উঠেছে। শহরের নবীনগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, উত্তর আরপিন নগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সুরমা নদীর পানি কূল উপচে প্রবেশ করেছে। জেলার শিল্পশহর ছাতকসহ এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবক’টি উপজেলায় বন্যা তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, বন্যার্তদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি নিয়ন্ত্রণ করতে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের সর্ব বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বেড়েছে ধরলা ও সানিয়াজান নদীর। সদর উপজেলার মোগলহাটের শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমায় অবস্থান করছে। ফলে ভাটিতে থাকা লালমনিরহাটের আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আগের পানি না সরতেই তৃতীয় দফায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ।

গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সবক’টি নদীর পানি দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়ে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হচ্ছে এবং জেলার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে আবারও পানি উঠতে শুরু করেছে।

শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ঘাঘট নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি উপজেলায় অনেক নিচু এলাকায় পানি উঠেছে।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনার সাত উপজেলার নিম্নাঞ্চল গত প্রায় ১৫ দিন ধরে পানির নিচে। ওইসব উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার সোমেশ্বরী, উদ্ধাখালী, মগড়াসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার বারহাট্টা, আটপাড়া, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, মোহনগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গত বুধবার বন্যার পানি অনেকটা কমে যাওয়ায় আশ্রয়ণ কেন্দ্র, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বাঁধে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছিল। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা অবিরাম বর্ষণ এবং উজানের ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি অনেকটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চরবাসী।

সাঘাটা (গাইবান্ধা) : যমুনা নদীবেষ্টিত সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাঁশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদনদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে স্রোতের তীব্রতাও। এতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে নদীভাঙন।

ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) : ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নতুন করে বৃদ্ধি পেতে শুরু করায় আবারও বন্যার আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় বসবাসকারী দুই লক্ষাধিক মানুষ। এদিকে পানি বৃদ্ধি পেলে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর ঘেঁষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয়দের দাবি- এখনই বাঁধটিতে কাজ করা হলে বড় ধরনের বন্যা হলেও ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে।

ডোমার (নীলফামারী) : তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে কিছামত ছাতনাই, ঝাড়সিঙ্গেশ্বর, চরখড়িবাড়ী, পূর্ব খড়িবাড়ী, পশ্চিম খড়িবাড়ী, তিস্তা বাজার, বাইশপুকুর, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ি এলাকার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেখানকার মানুষজন ও গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : তিস্তা ও ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ, নাজিমখান ও ছিনাই ইউনিয়নের নদী-পার্শ্ববর্তী গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত দু’দিনে এসব গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর বন্যার পানিতে ডুবে যায়। চরম দুর্ভোগে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে তাদের। গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ।

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) : তাহিরপুরে দ্বিতীয় দফা বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৬০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বসতবাড়িতে পানি ওঠার কারণে শনিবার সকাল থেকেই তাদের ঘরে রান্নার কাজ হচ্ছে না। শুকনো খাবার সংগ্রহ করে তারা খাদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছে। গত তিন দিন ধরে ভারি বর্ষণের ফলে পাহাড়ি যাদুকাটা নদীর ১৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কে সব ধরনের যানবাহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

ছাতক (সুনামগঞ্জ) : ছাতকে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ আগের বন্যার পানি বাড়িঘর থেকে নেমে যাওয়ার পরপরই আবারও বন্যায় প্লাবিত হয়েছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল। সড়কের কয়েকটি স্থানে পানি বেশি হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ছাতকের সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ। উপজেলার হাজারো মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েকশ’ একর বীজতলা। শহরের অলিগলিতে পানি ঢুকে পড়েছে। উপজেলায় বর্তমানে আটটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে।

গোলাপগঞ্জ (সিলেট) : সুরমা-কুশিয়ারার পানি দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধির ফলে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সুরমা নদীর পানি একাধিক পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে। অন্যদিকে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে নদী-তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের লামাপাড়া, কান্দিগাঁও, রস্তমপুর, খালোপার, নলু, মজিদপুর এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কানাইঘাট (সিলেট) : উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন, ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন, বাণীগ্রাম ইউনিয়ন, দীঘিরপাড় পূর্ব, সদর ইউনিয়ন, সাতবাঁক, বড়চতুল, লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ও লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের আংশিক নিম্নাঞ্চল বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। কানাইঘাট পৌরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) : গত শুক্রবার মধ্যে রাত থেকে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উব্দাখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদসহ, বাউশাম, বিশরপাশা, বরুয়াকোনা ও বড়খাঁপন কাঁচা ও পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ফের ভারি বর্ষণের কারণে সীমান্তবর্তী গনেশ্বরী নদী, মঙ্গলেশ্বরী নদী, মহাদেও নদী ও পাঁচগাঁও ছড়ায় পাহাড়ি ঢলের কারণে ফুলেফেঁপে ওঠে উপজেলার উব্দাখালী নদী।

মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ ) : গত দু’দিনে মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মিঠামইন উপজেলা সবক’টি ফসল রক্ষা বাঁধ পানিতে তালিয়ে গেছে। ভেঙে গেছে বিভিন্ন জায়গায়। এসব বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করেছে। মিঠামইনে নির্মাণাধীন ক্যান্টমেন্টের চারপাশে পানি প্রবল চাপ। যে কোনো সময় পানি ভেতরে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পলল্গী এখন হুমকির মুখে।

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) : কালিয়াকৈরে টানা বর্ষণে কয়েকটি এলাকার সহস্রাধিক ঘরবাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ও পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়েছে। অনেকের ঘরবাড়িতে ড্রেনের ময়লা পানি ঢুকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গতকাল শনিবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার হরিণহাটি, বিশ্বাসপাড়া, কালামপুর, আন্ধারমানিক, নিশ্চিন্তপুর ও রাখালিয়া চালা এলাকার নিচু জমিতে গড়ে ওঠা সহস্রাধিক ঘরবাড়িতে এখন বৃষ্টির জলাবদ্ধতার পানি দোল খাচ্ছে।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।