ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ শাহেদ গ্রেফতার

আবু সাইদ বিশ্বাস: হাফিজুর রহমান শিমুল: ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: মহামারীর মধ্যে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার নামে প্রতারণা আর জালিয়াতির মামলায় এক সপ্তাহ ধরে পলাতক রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দেবহাটা সীমান্তবর্তী কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর থেকে একটি গুলিভর্তি পিস্তলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের অধিনায়ক সিনিয়র এএসপি বজলুর রশিদ জানান। গ্রেফতারের পর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, “বোরকা পরে নৌকায় করে পাশের দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন সাহেদ। আর কিছুক্ষণ দেরি হলে হয়ত তাকে আর পাওয়া যেত না।“

গ্রেপ্তারের পর একটি হেলিকপ্টারে করে সাহেদকে নিয়ে সকাল ৯টার দিকে ঢাকার পুরাতন বিমানবন্দরে পৌঁছান র‌্যাব সদস্যরা।

বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাহেদ এই সাতক্ষীরারই ছেলে। গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান দপ্তরে র‌্যাবের অভিযানের পর থেকে তিনি লাপাত্তা ছিলেন।

কোভিড-১৯ পরীক্ষার প্রতিবেদন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। জানা যায়, ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে আসা এ চিকিৎসালয়ের লাইসেন্সের মেয়াদই পার হয়ে গেছে বহু আগে।

অভিযানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, করোনাভাইরাস চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

র‌্যাবের ওই অভিযানের পর রিজেন্টের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবরও সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কীভাবে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন, সেসব তথ্যও এখন গণমাধ্যমে আসছে।

রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।

ওই মামলায় সে সময় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে সাহেদের অন্যতম সহযোগী, রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাতক্ষীরার ছেলে সাহেদ স্কুলের শেষ দিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় ঢাকায় চলে আসেন। তার মা সুফিয়া করিম এক সময় মহিলা আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদিকা  ছিলেন। বাবা সিরাজুল করিম ছিলেন ব্যবসায়ী। শহরের কামালনগরে করিম সুপার মার্কেট নামে একটি বিপণি বিতান ছিল তাদের।

আবু সাইদ বিশ্বাস।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।