অনলাইন ডেস্ক: তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় নির্মিত বুড়িরহাট স্পারের মাটির তৈরি একটা অংশ নদীর প্রবল স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে।
গত তিনদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বালুর বস্তা ফেলে স্পারটি রক্ষার চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। এদিকে স্পারটির অংশ বিশেষ বিলীন হওয়ার পর আতংক দেখা দিয়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষের মধ্যে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তার ভাঙন থেকে জনপদ রক্ষায় ৩৫০ মিটার দীর্ঘ স্পারটি নির্মাণ করা হয়। এর ১৫০ মিটার কংক্রিটের এবং বাকি অংশ মাটি ও ব্লকের তৈরি।
গত কয়েকদিনে তিস্তার প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে মাটির তৈরি অংশের ৫০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, স্পারটি ভেঙে যাওয়ার ফলে উজান ও ভাটিতে ৫-৬টি গ্রামের মানুষ ভাঙন আতংকে রয়েছেন। পাশাপাশি বুড়িরহাট ও কালিরহাট বাজারসহ ঝুঁকিতে পড়েছে গাবুরহেলান গ্রামের স্পারটিও।
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবীন্দ্র নাথ রায় বলেন, স্পারটি ভেঙে যাওয়ার ফলে উজান ও ভাটিতে ৫-৬টি গ্রামের মানুষ ভাঙন আতংকে রয়েছে। পাশাপাশি বুড়িরহাট ও কালিরহাট বাজারসহ ঝুঁকিতে পড়েছে গাবুরহেলাল গ্রামের স্পারটিও।
মঙ্গলবার সরেজমিন ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের বুড়িরহাটে গিয়ে দেখা যায়, শত শত মানুষ ভেঙে যাওয়া স্পারটি দেখার জন্য ভিড় করছে। পাশেই ঘর-বাড়ির অবশিষ্ট অংশ সরিয়ে নিচ্ছে একটি পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুরা।
এদের একজন শরিফা বেগম বলেন, হঠাৎ করেই স্পারটি ভাঙনের কবলে পড়ায় তাদের বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তার পাশে মালামাল রেখে কোনোমতে দিনযাপন করছেন।
একই অবস্থা সালাম, মজিদুল, তৈয়ব, মঞ্জু মিয়াসহ কয়েকজনের। সবাই তিস্তার ভাঙনে ভিটেহারা।
ঘড়িয়ালডাঙা গ্রামের ইয়াসিন আলী বলেন, এই স্পারটি বেশ কয়েকটি গ্রামকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু এখন সবাই ঝুঁকিতে পড়েছেন। দ্রুত স্পারটি মেরামত না করলে শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, প্রবল স্রোতের কারণে স্পারের অংশ বিশেষ বিলীন হয়েছে। পানি কমে গেলে পাইলিং ও জিও ব্যাগ ফেলে স্পারটি মেরামত করা হবে।
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ জানান, স্পার ও বাঁধগুলো রক্ষায় আগে থেকেই প্রস্ততি নেয়া হলেও বন্যার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি স্থানে স্পার ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দ্রুত এটি মেরামত করা হবে।
এদিকে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রধান নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও ধরলা ও ব্রক্ষপুত্র নদের পানি এখনও বিপদসীমার উপর বইছে।
সূত্র: ইউএনবি