কক্সবাজারে সাগরতীরবর্তী স্থানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৫ সালে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৩৯টি ভবন নির্মাণ করার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে ২০টি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পের এ ২০টি ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ সকাল ১০টায় এ ভবনগুলো উদ্বোধন করবেন। বাঁকখালী ও মহেশখালী চ্যানেলের তীরে খুুরুশকূলের প্রাকৃতিক পরিবেশে দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত ২০টি ভবন উপকারভোগীদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হবে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্মিত প্রকল্পের এই ২০টি ভবনের নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা।
আবহমান বাংলার প্রকৃতি এবং কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানের নামে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০টি ভবনের নামকরণ করেছেন। যেমন সাম্পান, কোরাল, রজনীগন্ধা, গন্ধরাজ, হাসনাহেনা, কামিনী, গুলমোহর, গোলাপ, সোনালি, নীলাম্বরী, ঝিনুক, কেওড়া, মুক্তা, প্রবাল, সোপান, দোলনচাঁপা, ইনানী, মনখালী, শনখালী ও বাঁকখালী।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের অনেক স্মৃতিবিজড়িত স্থান হচ্ছে কক্সবাজার। কক্সবাজারের প্রতি জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও রয়েছে অনেক মমতা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার জানান, কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ৬৮২ একর খাসজমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিমাণ জমিতে বসবাসরত চার হাজার ৪০৯ পরিবারকে পুনর্বাসন করতে বাঁকখালী নদীতীরের খুরুশকুলের ২৫৩.৩৫ একর জমিতে তৈরি করা হচ্ছে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। জলবায়ু উদ্বাস্তু এসব মানুষ ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে কুতুবদিয়া, মহেশখালীসহ নানা স্থানে বসতি হারিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিল।
২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার সফরে এসে বিমানবন্দর সম্প্রসারণের পাশাপাশি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীতীরের প্রাকৃতিক পরিবেশে ২০১৫ সালে শুরু হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পটির ভরাটের কাজ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পে চারতলাবিশিষ্ট ১৩৯টি ভবন নির্মাণ করার কথা। এরই মধ্যে ২০টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভবনে রয়েছে ৩২টি করে ইউনিট। নির্মিত এসব ভবনে আশ্রয় পাবে ৬৪০টি পরিবার। পুনর্বাসিত এলাকায় স্কুল, কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা সবই থাকছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দেশে বহুতলবিশিষ্ট আশ্রয়ণ প্রকল্পে এই প্রথম পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এটি দেশের বৃহৎ আশ্রয়ণ প্রকল্প। বিশ্বের মধ্যেও বৃহৎ জলবায়ু আশ্রয়ণ প্রকল্প।