ক্রাইমর্বাতা রিপোট : দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ১৪৬তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৭২ জনের দেহে করোনাভাইরাস এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২৮ জন মারা গেছেন। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৭৬ জন।
শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ১৭০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬১৪টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৮০৯টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।তিনি বলেন, নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ২ হাজার ৭৭২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৭ হাজার ৬৬১ জন। মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২৮ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ১১১-এ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ১৭৬ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৩৫ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, মারা যাওয়াদের মধ্যে ২২ জন পুরুষ জন ও ৬ জন নারী। সকলেই হাসপাতালে মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৪৪৬ জন পুরুষ এবং ৬৬৫ জন নারী করোনায় মারা গেছেন।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে দু’জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১-৩০ বছরের মধ্যে দু’জন। বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, রাজশাহী ৩ জন, বরিশাল বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে একজন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৫৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৩১০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন একহাজার ১৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪০০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৫০ হাজার ৭১০ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৮৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৮৬ জনকে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৬৯০ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬২ জন ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইন আছেন ৫৬ হাজার ৮২৪ জন।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৪ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১ কোটি ৯ লাখের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশের ইতিহাসের দীর্ঘ এ ছুটির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে অফিস-আদালত খোলা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে গণপরিবহনও।