কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ক্রাইমর্বাতা রিপোট : ঈদ উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় স্বামীর। এতে অভিমান করে তিনি সেতু থেকে নদীতে লাফ দেন। এ সময় স্ত্রীর আর্তনাদ ও কান্না তাঁকে ফেরাতে পারেনি। ঘটনাটি রোববার দুপুরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ২য় ধরলা সেতুতে ঘটেছে। ওই ব্যক্তি সেতু থেকে লাফ দিয়ে পানিতে পড়ে স্রোতে ভেসে যান। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে বিকেল ৪টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ওই ব্যক্তির নাম জোবায়ের আলম (২২)। তিনি ফুলবাড়ী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চন্দ্রখানা কলেজপাড়ার আমীর হোসেনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, জোবায়ের আলম লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার হারাটি এলাকায় বিয়ে করেন। আজ দুপুরে স্ত্রী, শ্যালক, শ্যালিকাসহ অটোরিকশায় দাওয়াত খেতে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে শ্বশুরবাড়ি যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। জয় শ্বশুরবাড়িতে যেতে চাচ্ছিলেন না। স্ত্রী ছাড়বেন না। এ নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে তাঁরা ধরলা সেতুর মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছালে জয় আকস্মিকভাবে অটোরিকশা থেকে নেমে দৌড় দেন। নদীতে লাফ দেবেন বলতে বলতে তিনি সেতুর রেলিং-এর দিকে দৌড়াতে থাকেন।
স্বামীকে থামাতে স্ত্রী চিৎকার করতে করতে তাঁর পেছনে দৌড়াতে থাকেন। এর মধ্যে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেতুর রেলিংয়ের ওপর উঠে নদীতে লাফিয়ে পড়েন জোবায়ের। এ সময় তাঁর স্ত্রী আর্তনাদ করতে থাকেন। তাঁর বুকফাটা চিৎকার ও চোখের পানি জোবায়েরকে ফেরাতে পারেনি। দেখতে দেখতে চোখের সামনে ধরলার গভীর পানিতে তলিয়ে স্রোতে ভেসে যান স্বামী। এক সময় স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে সেতুতে পরে যান। এমন মর্মান্তিক ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে পড়েন উপস্থিত সবাই। পরে পরিবারের লোকজন শিউলিকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
জোবায়েরের শ্যালক শরীফুল ইসলাম জানান, ‘দুলাভাই আমাদের বাড়িতে যেতে চাচ্ছিলেন না। এ নিয়ে বোন-দুলাভাইয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি চলছিল। তিনি (দুলাভাই) যে নদী থেকে লাফ দেবেন, তা বুঝতে পারিনি।’
ফুলবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান জানান, যদিও নদীর গভীরতা ও স্রোত বেশি, তারপরও পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ প্রচেষ্টায় খুব দ্রুত লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামছুর নাহার জানান, জোবায়েরের লাশ হাসপাতালে আছে। স্ত্রী সুস্থ আছেন। পরিবারের সদস্যদের হাতে লাশ তুলে দেওয়া হবে।