সাতক্ষীরায় সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার ॥ আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

ক্রাইমবার্তা রিপোট : নিখোঁজের ১০দিন পর স্কুলছাত্র মইনুর রহমানের (১৬) গলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত হুমায়ুন কবীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম মোঃ রেজোয়ানুজ্জামানের কাছে তিনি এ জবানবন্দি দেন। নিহত মঈনুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পাঁচরখী গ্রামের সুরত আলীর ছেলে ও সে সাতক্ষীরার ভোকেশনাল স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দানকারি হুমায়ুন কবীর (৩৬) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামের ওয়াহেদ সরদারের ছেলে।
পাঁচরকী গ্রামের সুরত আলী জানান, তার ছেলে মঈনুর রহমান সাতক্ষীরা টেকনিক্যাল স্কুল এণ্ড কলেজের নবম শ্রেণেীতে পড়াশুনা করতো। মাঝে মাঝে সে ইজিবাইক চালাতো। গত ৩১ জুলাই বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ইজিবাইক নিয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর তার সঙ্গে শেষ কথা হয়। সারা রাত খোঁজাখুজির পর তার সন্ধান না মেলায় ঈদের দিন পহেলা আগষ্ট তার ভাই আফছার আলী সদর থানায় ২০ নং সাধারণ ডায়েরী করেন। সে অনুযায়ি পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোমবার সকালে সদরের আলীপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে হুমায়ুন কবীরকে তার শ্বশুর শ্রীরামপুর গ্রামের গফুর দফাদারের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় মঈনুরের ব্যবহৃত ইজিবাইক। বিকেল ৫টার দিকে শহরতলীর বাঁকালে আব্দুস সবুরের মালিকানাধীন একটি পরিত্যক্ত ইটভাটার সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে পুলিশ মঈনুরের গলিত লাশ উদ্ধার করে।
সদর থানার ওসি মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, হুমায়ুন কবীরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এবং তার দেখিয়ে দেওয়া মতে মইনুলের ব্যবহৃত ইজিবাইক ও পঁচাগলা লাশ উদ্ধার করা হয়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে মঈনুরের লাশ মঙ্গলবার বিকেলে তার স্বজনদেও হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুরত আলী বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত হুমায়ুন কবীরসহ দু’জনের নাম উল্লেখ কওে অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত হুমায়ুন কবীর জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম মোঃ রেজোয়ানুজ্জামানের কাছে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ঈদের আগের দিন গত ৩১ জুলাই সদর উপজেলার পাঁচরকি গ্রামের সুরত আলীর ছেলে ও মীর্জাপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শেনীর ছাত্র ময়নুর (১৬) তার লেখা পড়া শেষ করে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে বড় ভাইয়ের ইজিবাইকটি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সাতক্ষীরা শহরের দিকে আসে। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইক ভাড়ায় চালানোর পর সে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরদিন পহেলা আগষ্ট (ঈদের দিন) ময়নুরের চাচা আফছার আলী সদর থানায় ময়নুর নিখোঁজের হয়েছে মর্মে একটি জিডি করেন। জিডির সূত্র ধরে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সদর থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হুমায়ন কবিরকে তার শ^শুর বাড়ি শ্রীরামপুর থেকে গ্রেফতার করেন।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।