যশোরের বসুন্দিয়ায় করোনাকালে কিস্তি আদায়ে এনজিও’র চাপে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি

মোঃ রাসেল হোসেন,ক্রাইমবার্তা রিপোট: ভ্রম্যমান প্রতিনিধি (যশোর) ॥ যশোরের বসুন্দিয়া এলাকায় এনজিও’র চাপে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। মহামারি করোনাকালে সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্রাক, গ্রামীন ব্যাংক এবং জাগরনী চক্র, আশা ফাউন্ডেশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের বিরুদ্ধে কিস্তির টাকা না দিলে মামলা ও মানহানিকর বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে। ফলে এনজিও’র কিন্তিুর জালে আটকে পড়ে অনেকেই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয়রা।
এমনই ঘটনায় গ্রামীন ব্যাংক বসুন্দিয়া শাখার ম্যানেজার হাফসা খালেদা বলেছেন সরকার কি বলেছে সেটা বিষয় নয়। আমাদের নিজস্ব কিছু নিয়মনীতি আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া এলাকার কেফায়েতনগর গ্রামের পূর্বপাড়ায় সম্প্রতি গ্রামীন ব্যাংকের মাঠ কর্মী শামসুল হক কিস্তির টাকা আদায় করতে আসেন এসময় করোনাকালিন দুর্যোগে অনেকেই কিস্তির টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন। কিন্তু সেই সকল গ্রাহকদের আইনের ভয় দেয়াসহ পূণরায় বাড়িতে বাড়িতে আসা হবে এবং বিভিন্ন ধরনের মানহানীকর কথা বলেন ওই মাঠ কর্মী। পাশপাশি বাধ্যতা মূলকভাবে গ্রাহকদের সঞ্চয় থেকে কিস্তির টাকা কর্তনের জন্য বলা হয়। অনেকেই মানসম্মানের ভয়ে বসুন্দিয়া বাজারস্থ্য গ্রামীন ব্যাংকের অফিসে গিয়ে সঞ্চয় থেকে অগ্রীম ঋনের কিস্তির সমন্বয় করে দিয়েছেন। এর আগে রোববার বসুন্দিয়া মোড়স্থ্য মাস্টারপাড়ায় একই ধরণের ঘটনার জন্ম দেন গ্রামীন ব্যাংকের আরেক মাঠকর্মী অপূর্ব। সেখানেও কিস্তির টাকা পরিশোধ না করলে সঞ্চয় থেকে সমন্বয় শুধু নয় বরং গ্রাহককে টাকা দিতে কৌশলে বাধ্য করছে । খোজ নিয়ে জানা যায় গ্রামীন ব্যাংকের প্রত্যেক কেন্দ্রে চলছে একই ধরনের কড়াকড়ি। অভিযোগ উঠেছে আশা ফাউন্ডেশনের কয়েকটি কেন্দ্রের মাঠকর্মীদের বিরুদ্ধে। আর কখনও ঋণ দেওয়া হবেনা, এমন ভয় দেখিয়ে কঠোরভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে কিস্তির টাকা। সৃজনী বাংলাদেশ, আর,আর,এফ, জাগরণীচক্র ফাউন্ডেশন, সমাধান, পলিমাটি, দারিদ্র বিমোচন, বীজ, বন্ধু কল্যাণ সংস্থ্যা, পরিবার উন্নয়ন ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ সহ এলাকার সকল মাসিক, সাপ্তাহিক ও দৈনিক কিস্তির এনজিও একইভাবে গ্রাহকদের জিম্মি করে কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকদের হুসিয়ারী দিয়ে বিকালে কিস্তির টাকা আদায় করতে ম্যানেজারকে নিয়েই হাজির হচ্ছেন গ্রাহকের বাড়িতে। এই ব্যাপারে বিভিন্ন কেন্দ্রের গ্রাহকরা জানান, করোনাকালীন মহামারিতে অর্থনৈতিক অস্বচ্চলতায় কিস্তির টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
ক্ষুদ্রঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমআরএ’র সার্কুলারে বলা হয়, কোনো গ্রাহক নিজ ইচ্ছায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করলে তা নিতে কোনো বাধা থাকবে না। তবে কোনো ক্রমেই কোনো ঋণকে নতুন করে খেলাপি করা যাবে না।
সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাসের প্রভাবে অর্থনীতির অধিকাংশ খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের ঋণের কিস্তি পরিশোধের সক্ষমতা হারিয়েছে। করোনার নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিল্প, সেবা ও ব্যবসা খাত স্বাভাবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারছে না। করোনার প্রভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঋণ গ্রহীতাদের আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকার আশংকা দেখা দিয়েছে। এ সব বিবেচনায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে ওই সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি নিয়ম-নীতি অবজ্ঞা করে কিস্তির টাকা আদায়ের জোর চেষ্টা চালানো এবং ভয়ভীতি দেখানোর কারণে আমরা দিশেহারা ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি কিন্তু পরবর্ত্তিতে আর ঋণ দেয়া হবেনা এমন হুমকি থাকায় অনেকেই কষ্ট চেঁপে রাখছে, কাউকে কিছু বলতে চাচ্ছেনা। আমরা দ্রুত প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।