ক্রাইমবাতা ডেস্ক রিপোট:মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক বাহিনীর অভিযানের সময়ে সৈনিকদের প্রতি নির্দেশ ছিল- ‘যাকে দেখবে গুলি করবে।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ার সময় মিয়ানমারের দু’জন সৈনিক এ কথা বলেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। খবর দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া ওই দুই সৈনিক হলো মিও উইন তুন ও জ নায়েং তুন। আদালতে তারা সামরিক বাহিনীর অভিযানে নারী, শিশু ও নিরীহ মানুষদের হত্যা, গণকবরে মাটিচাপা দেওয়া, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের কথা স্বীকার করে। এভাবে নৃশংসভাবে জাতিগত নিধন চালালেও বারবার তা অস্বীকার করে আসছিল মিয়ানমার সরকার।
ফরটিফাই রাইটসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই স্বীকারোক্তির ফলে ধারণা করা হচ্ছে, সৈনিক মিও উইন তুন ও জ নায়েং তুন আদালতের কাছে নিজেদের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ভবিষ্যতে মামলায় কাজ করবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিভিন্ন ধরনের সাক্ষী সুরক্ষার নিয়ম আছে এবং তার অধীনে এ ধরনের সাক্ষীদের সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হয়।
এ দুই সৈনিক ১৯ জনের নাম বলেছে, যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ছাড়া ছয় জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এসবের নির্দেশ দিয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুধু এ দুই সৈনিক কমপক্ষে ১৮০ রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
মিও উইন তুন স্বীকারোক্তিতে বলে, কর্নেল থান থাকি রোহিঙ্গাদের সমূলে হত্যার নির্দেশ দেন। এরপর সৈনিকরা রোহিঙ্গাদের কপালে গুলি করে এবং লাথি মেরে কবরে ফেলে দেয়।
বুথিডং অঞ্চলে কয়েকটি গ্রাম ধ্বংস করা, ৩০ রোহিঙ্গাকে হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকাসহ আরও ৬০ থেকে ৭০ রোহিঙ্গা হত্যার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়েও স্বীকারোক্তি দেয় এই সৈনিক।
জ নায়েং তুন জানায়, মংডু এলাকায় ২০টি গ্রাম ধ্বংস এবং অন্তত ৮০ জনকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল সে। এ ছাড়া সার্জেন্ট পায়ে ফোয়ে অং এবং কিয়েত ইয়ু পিনের তিন রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ করার সাক্ষীও সে।