ঘটনাস্থল ভারতের রাজধানী দিল্লি কিংবা চীনের রাজধানী বেইজিং থেকে কয়েক হাজার মাইল দূর। রাশিয়ার রাজধানী মস্কো। আর এখানেই সাংহাই কর্পোরেশন সামিটের ফাঁকে বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় রাত আটটায় বৈঠকে বসলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি। তার আগেই বরফ গলানোর উদ্দেশ্যে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভারব দু’ দেশের বিদেশমন্ত্রীদের নিয়ে একটি মধ্যাহ্নভোজের আসর বসান। এরপর সন্ধ্যায় দু’ঘন্টার বেশি সময় বৈঠক চলে জয়শঙ্কর এবং ওয়াং লির মধ্যে।
রাজধানী দিল্লির সাউথ ব্লক কার্যত নিদ্রাহীন রাত কাটায় বৃহস্পতিবার। পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন সীমান্ত সংঘর্ষের পর এই প্রথম বৈঠক দু’ দেশের বিদেশ মন্ত্রীর। কি হয়, কি হয় ভাব।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই বৈঠকের কোনও ফল জানা যায়নি। অবশেষে ভোরের সূর্যের আলোর সঙ্গে যেন এলো হঠাৎ আলোর ঝলকানি। সীমান্তে শান্তি ফেরাতে দু’ দেশের বিদেশমন্ত্রী ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।
পাঁচ দফা প্রস্তাব নিয়ে দু’দেশের যৌথ বিবৃতি এলো এর পরপরই। বিবৃতিতে যা বলা হয়েছে তা হল-
এক: দু’ দেশ মনে করে সীমান্তে শান্তি ফেরানো জরুরী। মে মাসের আগের অবস্থানে ফিরে যাবে দুই দেশই।
দুই: ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী জি লিং পিং দু’হাজার আঠারো ও ঊনিশের দুটি সামিটে ভারত-চীনের সম্পর্কের উন্নয়নে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেনাকে সেই মোতাবেক কাজ করতে হবে।
তিন: ভারত-চীন সীমান্ত সম্পর্কে গৃহীত সব প্রোটোকল মেনে চলবে ভারত ও চীনা সেনা।
চার: ডায়ালগ এর মধ্যে দিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতে হবে, অস্ত্রের মাধ্যমে নয়।
পাঁচ: দু’ দেশের সীমান্ত সম্পর্কিত প্রচলিত আইনগুলোর পর্যালোচনা করা হবে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত-চীনের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে এবং দু’দেশের যৌথ কর্মসূচির বিষয়ে বিশ্বকে অবহিত করা হবে। এটি দু’ দেশের স্বার্থেই প্রয়োজন। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, নিজেদের স্বার্থেই ভারত-চীন দ্বন্দ্ব আপাতত শিকেয় তুলে রাখলেও ভূ- অধিকার নিয়ে সংঘাতটি থেকেই গেল। কারণ এই বৈঠকে অরুণাচল প্রদেশে চীনের আগ্রাসী নীতি অথবা প্যাংগং এ অবস্থান নিয়ে একটি শব্দও বলা হয়নি।