বাংলাদেশ ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ভারতে বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কাজ করা নেতারা প্রায়ই বলেন, ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে বিশ্বাস করে সরকার এবং সেক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ। কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় শুধু বিজেপি সরকারই নয়, ভারতে সব সরকারের আমলেই পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ ছিল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করে গেছেন ভারতের সব ঝানু কূটনীতিকরা।
ইন্দিরা গান্ধী ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব, জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সুবিমল দত্তকে ‘ব্যক্তিগত অনুরোধ’ এ স্বাধীন বাংলাদেশে ভারতের প্রথম হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিতে সক্ষম হন। সেই থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীকে হিসেবে ধরলে মোট ১৭ জন হাইকমিশনার ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।
বিক্রম দোরাইস্বামী ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং একসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভাগের যুগ্ম সচিব ছিলেন।
বর্তমান তথা বিদায়ী ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ ২০১৯ সাল থেকে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) পদে যোগ দেবেন।
রীভা গাঙ্গুলির আগের হাই কমিশনার (২০১৬-২০১৯) হর্ষ বর্ধন শ্রীংলাকে ঢাকা থেকে পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে। তিনি এখন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।
শ্রীংলার ঠিক আগের (২০১২-২০১৫) হাই কমিশনার পঙ্কজ শরন ঢাকা থেকে বিদায় নিয়ে রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত হন।
এখন তিনি ভারতের সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
পঙ্কজ শরনের আগে ঢাকায় নিয়োজিত ভারতের হাইকমিশনার (২০০৯-২০১১) রাজীত মিত্র বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর বিষয়ক যৌথ গবেষণা কেন্দ্রের নেতৃত্বে যান।
রাজীত মিত্রের আগে ১/১১’র উত্তাল দিনগুলোতে (২০০৭-২০০৯) বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার ছিলেন পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন শেষে থাইল্যান্ডে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে ‘সাফল্যের সাথে’ নিজেদের দায়িত্ব পালন শেষে ঢাকায় নিয়োজিত প্রায় সব হাইকমিশনারই পরবর্তীতে পেয়েছেন বড় কোন দায়িত্ব।