চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি :যশোরের চৌগাছায় রাম-দা দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠিপেটা করে সাইদুর রহমান (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে উপজেলার মাঠচাকলা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে এবং যশোর সরকারি এমএম কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ) ছাত্র। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা। রাতে সেখানে ক্ষতস্থানে সেলাইয়ের পর স্বজনরা তাকে যশোর ইবনে সিনা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের নিমতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আহতের পরিবার চৌগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।
আহতের চাচাতো ভাই জানান, আমার ভাই সাইদুর বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়কের নিমতলা বাজার থেকে গ্রামের ফিরোজ ও সাজেদুরের সাথে বাড়িতে যাচ্ছিল। বাজার থেকে ২ মিনিট হেটে বাড়ি পৌছানোর ২/৩শ ফুট দুরে থাকতে হঠাৎ রাস্তার পাশে ওৎ পেতে থাকা একই গ্রামের মশিয়ারের ছেলে ফরহাদ (১৯) লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে। সাইদুর মাটিতে পড়ে গিয়ে চিৎকার করতে থাকে আমি সাইদুর, আমাকে মারছ কেন? এসময় গ্রামের ছাব্দারের ছেলে আশরাফুল (৩০) একটি রাম-দা দিয়ে কোপ দিলে তার বাম হাতে মারাত্মক জখম হয়। এসময় সাইদুরের সাথে থাকা একজন মোবাইলের লাইট অন করলে আশরাফুল ও ফরহাদ তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। সাইদুর তাদের দুজনকে চিনতে পেরেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। এদের সাথে অন্যকেউ ছিল কিনা সে বলতে পারেনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। মুজাহিদ বলেন সাইদুরের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার বাম হাতে কমকরেও ৪০টি সেলাই দেয়া লেগেছে। দুই ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে তার শরিরে। চিকিৎসক বলেছেন আরো রক্ত দেয়া লাগতে পারে।
মুজাহিদ আরো বলেন আমরা ধারনা করছি অন্য কাউকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন করতে চাইলেও রাতের আধারে ভুল করে সাইদুরের ওপর আক্রমন করেছে। এমন ধারনা কেন প্রশ্নে তিনি বলেন মোবাইলের লাইট অন করলে সাইদুরকে চিনতে পেরেই তারা ফেলে চলে গেছে। তাছাড়া আমার ভাইয়ের বা আমাদের পরিবারের কারো সাথে কোন বিরোধ নেই। এমনকি আমার ভাই কারো সাথে মাথা উচুঁ করে কথাও বলে না।
স্থানীয়রা বলছেন আশরাফুল একটি অস্ত্রমামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামী। তার জ্ঞাতি ভাই গ্রামের কাদেরের ছেলে জুয়েলের সাথে তার বিরোধ রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি জুয়েলকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হয়ত এই আক্রমন করে সে। স্থানীয়রা আরো জানান আশরাফুলের নেতৃত্বে গ্রামের মশিয়ারের ছেলে ফরহাদ, আজুর ছেলে মুক্তার, নূরুর ছেলে তুহিনসহ একটি কিশোর গ্যাং মাদক সেবনসহ নানা রকমের অপরাধের সাথে জড়িত। তাদের অত্যাচারে ওই গ্রামবাসি অতিষ্ট হলেও নেশাগ্রস্থ এবং ভয়ঙ্কর প্রকৃতির হওয়ায় ভয়ে কিছু বলতে পারেন না।
হাকিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ওরা মারবে জুয়েলের। একই রকম চেহার হওয়ায় সাইদুরের ওপর হামলা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। জুয়েলকে মারবে কেন প্রশ্নে তিনি বলেন জুয়েলের সাথে ওদের অনেক আগের পারিবারিক গোলমাল ছিল। সে কারনে স্থানীয়রা এমনটা ধারনা করছেন।