‘পৃথিবী পাঁচ বৃহৎ শক্তির চেয়ে বড়’ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পুনর্গঠন প্রয়োজন: এরদোগান

আন্তর্জাতিক ডেক্সঃ       তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে, ‘পৃথিবী পাঁচ বৃহৎ শক্তির চেয়ে বড়’এই বিষয়টি  আবারও সঠিক প্রমাণিত হয়েছে । জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পুনর্গঠন থেকে শুরু করে জাতিসংঘের “ব্যাপক এবং অর্থবহ সংস্কার” এর  প্রয়োজন রয়েছে।

“আমরা দেখেছি এই সংকটের সময় বিদ্যমান বৈশ্বিক পদ্ধতি কতটা অকার্যকর। এটা এতটাই সত্য যে জাতিসংঘের সবচেয়ে মৌলিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস সময় লেগেছে।

এরদোগান ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ পরিষদে বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থার সুনাম হারানো প্রতিরোধে মানসিকতা, প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ম পর্যালোচনার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এরদোগান বলেন যে মানবতার ভাগ্য সীমিত সংখ্যক দেশের দয়ায় ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন,”আমাদের অবশ্যই কাউন্সিলকে আরো কার্যকর, গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক কাঠামো এবং কার্যক্রম প্রদান করতে হবে। একইভাবে, আমাদের সাধারণ পরিষদকে শক্তিশালী করা উচিত, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাধারণ বিবেককে প্রতিফলিত করে,”

তিনি সিরিয়ার শরনার্থী প্রসঙ্গে বলেন,”আজ, তুরস্কের মতো দেশ, যারা সর্বোচ্চ সংখ্যক শরণার্থীর আশ্রয় দিয়েছে। তাদের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে তাদের সকল মানবিক মর্যাদা রক্ষা করেছে, তবে অপর কিছু রাষ্ট্র, যার মধ্যে কিছু ইউরোপীয় দেশও রয়েছে, দুর্ভাগ্যবশত, শরণার্থী এবং আশ্রয় প্রার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে।

তিনি বলেন, তুরস্কই একমাত্র দেশ যারা লিবিয়ার বৈধ সরকারের সাহায্যের আহ্বানে  “সুদৃঢ় সাড়া” প্রদান করেছে এবং সমর্থন জানিয়েছে। এরদোগান “লিবিয়ায় একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের” প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন।

ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে এরদোগান ১৯৬৭ সালের সীমান্তকে ভিত্তি ধরে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে  স্বাধীন, সার্বভৌম, নিরবচ্ছিন্ন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনি জনগণ যে পরিকল্পনাকে সম্মতি দেয় না, তুরস্ক এমন কোন কিছুকে সমর্থন করবে না।“

কাশ্মীর সংঘাত নিয়ে এরদোগান বলেন যে এটি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা এবং শান্তির চাবিকাঠি এবং “একটি জ্বলন্ত ইস্যু” হিসেবে রয়ে গেছে  তিনি আরও বলেন, “ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর গৃহীত পদক্ষেপ এই সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। “আমরা আলোচনার মাধ্যমে, জাতিসংঘের প্রস্তাবের কাঠামোর মধ্যে এবং বিশেষ করে কাশ্মীরের জনগণের প্রত্যাশার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানের পক্ষে।“

উল্লেখ্য যে,বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের মতে, ১৯৮৯ সাল থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর কর্তৃক হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং নির্যাতিত হয়েছে। ৫ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে ভারত সরকার তার সংবিধান থেকে ৩৭০ ধারা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিধান বাতিল করে, যা দেশটির একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশকে স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত করে। এছাড়াও এটি তিনটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়।

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।