সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, ধর্ষণ, গুম, খুন, ক্রসফায়ার ও দুর্নীতির কারণে দেশ আজ মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আর এসব অপকর্মের সাথে সরকার, সরকারিদল জড়িত।বিচার চেয়েও বিচার পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের মানুষ আজ চরম অসহায়বোধ করেছে।
সাংবাদিক নেতারা বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং মানবিক রাষ্ট্রের দাবিতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত মানববন্ধন ও সাংবাদিক সমাবেশ নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন ও সাংবাদিক সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজের সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সহসভাপতি শাহিন হাসনাত, তোফাজ্জল হোসেন, খন্দকার আলমগীর হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক রোজী ফেরদৌস, দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, জেসমিন জুঁই প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন কোন দেশে ধর্ষণ হয় না? আবার আরেক মন্ত্রী বললেন, আমেরিকা-ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে নারী নির্যাতন কম হয়। ধর্ষণের ঘটনায় মন্ত্রীদের এমন বক্তব্য ধর্ষকদের অনুপ্রাণিত করে। ভেবে দেখুন আমরা কোন দেশে বাস করছি? তিন বছরের কন্যাশিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। মা-বোনদের সরকারি দলের লোকেরা ধরে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করছে। স্বামীর কাছ থেকে তুলে নিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করছে। বাবা-মায়ের সামনে কন্যাকে ধর্ষণ করছে। এরকম একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশে। বলা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এখন মানুষ বেশি জানতে পারছে। অথচ দেশে শতকরা ৮০টি ধর্ষণের কথা প্রকাশই পায় না। বাকি শতকরা ২০টি ধর্ষণের মধ্যে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায় ১০টি। তার মধ্যে শতকরা পাঁচটি ক্ষেত্রে ধর্ষকের শাস্তি হয়। আবার যাদের শাস্তি হয় কিছু দিন পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
সাংবাদিক নেতারা নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় আসামি রুহুল আমিনকে জামিনে মুক্তি দেয়ার তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের পর ওই নারীকে ধর্ষণের মামলার অন্যতম আসামি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য এই রুহুল আমিন। তাকে জামিন দেয়া মানেই ধর্ষককে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া। এই সরকার এভাবে ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। কাজেই এ সরকারকে বিদায় দেয়া না গেলে দেশ কিছুতেই ধর্ষণ মুক্ত হবে না।
রাজনৈতিক প্রভাবে অপরাধীরা মনে করে তাদের কিছু হবে না। আর এই প্রবণতা থেকে প্রতিদিন মা-বোনের ইজ্জত কেড়ে নিচ্ছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগাররা।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, করোনার চেয়েও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ধর্ষণ প্রবণতা।এটা আগে রুখতে হবে। আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, সন্তানরা আজ নিরাপদ নয়।
সূত্র : প্রেস বিজ্ঞপ্তি