ছোট বোনকে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় বড় বোনকে কুপিয়েছে কিশোরগ্যাং

ক্রাইমবাতা ডেস্করিপোট:  নারায়ণগঞ্জে ছোট বোনকে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় গার্মেন্টকর্মী বড় বোনকে কুপিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ঘটনার পর থানায় জিডি করায় সোমবার রাতেও কয়েক দফা হামলা চালায় তারা।

ছুরিকাঘাতে আহত গার্মেন্টকর্মী লাবুনীকে (২৫) ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। একদিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন লাবুনী। তার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করা হয়। গত রোববার রাতে সদর উপজেলার ফতুল্লার শিহাচর শাহজাহান রোলিং মিল এলাকায় মনির হোসেনের ভাড়াটিয়া বাড়িতে এ ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হারেজ মিয়া ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগম ৩ মেয়ে ২ ছেলে নিয়ে মনির মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে আহত লাবুনী ও খলিল নামে আরেক ছেলের উপার্জনে তাদের ৭ জনের সংসার চলে।

এই পরিবারের ছোট মেয়ে লাকীকে দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার জীবন (১৬) ও লাদেন (১৭) নানাভাবে উত্যাক্ত করে আসছে।

প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিতো তারা। এনিয়ে এলাকাবাসী জানতে পারলেও ভয়ে কিশোর অপরাধীদের কিছু বলতে পারতেন না। কারণ তাদের প্রত্যেকের হাতে দেশি-বিদেশী অস্ত্র থাকে। সাধারণ বিষয়ে তারা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়।

আহত লাবুনী জানান, রোববার রাত সাড়ে ৯টার সময় জীবন ও লাদেনসহ প্রায় ১০-১৫ জন কিশোর বয়সের ছেলে আমাদের বাসায় আসে। তাদের কারো বাবার নাম জানি না। তবে আমাদের এলাকায় তারা কিশোর অপরাধী হিসেবে পরিচিত। তারা যখন আমাদের বাসায় আসে তখন আমি গার্মেন্ট থেকে বাসায় এসেছি। কিশোররা এসেই আমাদের ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে জীবন নামে একজন আমার বোন লাকীকে জড়িয়ে ধরে খাটে ফেলে দেয়। তখন আমি চিৎকার করে জীবনকে ধাক্কা দিয়ে লাকীকে জড়িয়ে ধরি। এ সময় তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।

এরপর লাকীকে টেনে-হেঁচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন আবারও আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে জীবন আমার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে দলবল নিয়ে চলে যায়। এ সময় আমার মা-বোন ও ছোট ভাইসহ আশপাশের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক আক্রান্ত স্থানে ১৮টি সেলায় করে একদিন ভর্তি রাখেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় কিশোরদের ভয়ে থানায় গিয়ে তথ্য গোপন করে অভিযোগ না করে একটি জিডি করেছি। জিডির বিষয়টিও জীবন ও তার লোকজন জানতে পেরে সোমবার রাতে কয়েক দফা আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে টিনের ঘর ও দরজা জানালা কুপিয়ে জিডি ওঠানের হুমকি দিয়ে চলে যায়। জিডি না ওঠালে পরিবারের সকলকে কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।

লাবুনীর মা সেলিনা বেগম বলেন, আমরা গরীব আর ওই সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে চলে। আমরা তাদের সঙ্গে কিছুতেই পারবো না। এলাকাবাসী শুনেও ভয়ে কোন প্রতিবাদ করেনি। যদি প্রশাসন বিচার করে তাহলে সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই। সন্ত্রাসীরা কতটুকু ভয়ঙ্কর তা আমার পরিবারের সকলে ও এলাকাবাসী জানে। আর যদি বিচার না পাই, তাহলে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় চলে যাবো।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশের দুটি টিম পাঠানো হয়েছে। আশা করি, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।