হত্যাকারীদের চিনতে পারায় দুই শিশুকে হত্যা!

ক্রাইমবাতা রিপোট: কলারোয়া:  সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বাবা-মাকে গলা কেটে হত্যার সময় হত্যাকারীদের চিনতে পারায় কী কাল হলো মাহি ও তাসনিমের? ঘাতকদের চিনতে পারায় কোমলমতি এ দুই শিশুকি নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর খলসী ওয়ার্ড সদস্য সোহরাব হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (১০) ও মেয়ে তাসনিমকে (৭) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। তবে ৬ মাসের শিশু কন্যা মারিয়াকে কিছু করেনি হত্যাকারীরা। তালা ভেঙে সিড়ি দিয়ে প্রবেশ করলেও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বের হয়ে গেলে কিছু নমুনা থাকে সেই রকম কিছুও পাওয়া যায়নি। এ রকম ঘটনা ঘটাতে হলে দুই-পাঁচ জন মানুষ লাগে, সে রকম কোনও আলামত এখানে দেখা যায়নি। তাদের সঙ্গে জমি নিয়ে কিছু লোকের বিরোধ ছিল। তারা ঘটিয়েছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বাবা-মাকে জবাই করে হত্যার সময় হত্যাকারীদের চিনতে পারায় দুই শিশুকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে হত্যাকাণ্ড দেখে পেশাদার খুনি বলে মনে হচ্ছে না। শাহিনুর রহমানকে পা বেঁধে আলাদা একটি ঘরে হত্যা করা হয়েছে। দুই বাচ্চা ও মাকে আলাদা আরেকটি ঘরে হত্যা করা হয়েছে।

ওয়ার্ড সদস্য সোহরাব হোসেন আরও বলেন, যে ঘরে এই মর্মান্তিক এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘঠেছে তার ৩০ হাত দূরে নিহত শাহিনুর রহমানের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামের ঘর। কিন্ত হত্যাকারীরা যখন ছাদের চিলেকোঠার দরজা দিয়ে প্রবেশ করলো সে কেন বুঝতে পারলো না, সেটিও প্রশ্ন তুলেছে। ঘটনা যেভাবে ঘটেছে তাতে সন্দেহের তালিকায় আসে সে। বর্তমানে সে পুলিশ নজরদারিতে আছে।

তিনি বলেন, নিহত শাহীনুরের মা শাহিদা খাতুন (৬০) আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। শাহীনুরের তিন ভাইয়ের মেঝভাই আশরাফুল মালয়েশিয়া থাকেন। অপরজন রায়হানুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী। বর্তমানে দাদী ছাড়া শিশু মারিয়াকে দেখার মতো কেউ নেই।

হেলাতলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শাহিনুর রহমান মাছের ব্যবসা করতেন। খুব ভালো মানুষ ছিলেন। এলাকার কারো সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করতে শুনিনি। এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি একাধিক কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু বিষয় আলোচনায় এসেছে। এর মধ্যে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধ থাকতে পারে। নিহতের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা ছিল। আমরা সব কয়টি বিষয় যাচাই-বাছাই করছি। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কেউ ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের চাচা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করবেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোররাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামে একই পরিবারের চার জনকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।