পাটের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যক্তিখাতের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানার পাটকল থাকা দরকার। বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের কেবল উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। জিটুজি, পিপিপি অথবা লিজিং এর প্রক্রিয়ায় নতুন করে মিলগুলো চালু করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান আজ (সোমবার) দুপুরে খুলনার খালিশপুর প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস অফিসার্স ক্লাব চত্ত্বরে প্লাটিনাম জুট মিলস লিঃ এর অবসরপ্রাপ্ত এবং অবসায়নকৃত (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ) শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনার চেক এবং সঞ্চয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সম্পদ রক্ষা ও মানুষের প্রতি ভালবাসার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তাঁর ওয়াদা অনুযায়ী ভারী শিল্প, ব্যাংক-বীমা খাতকে স্বাধীনতার পরে জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বিরাষ্ট্রীয়করণ কূটকৌশলের আওতায় পাটকলগুলো অলাভজনক দেখিয়ে ব্যক্তিখাতে দেওয়া অথবা বন্ধ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা পুনরায় মিলগুলো চালু করেন। তিনি আরও বলেন, মিলের দুরাবস্থার জন্য শ্রমিকরা দায়ি নয়। কর্মকর্তারা ভিজেপাট ক্রয় করেন, শ্রমিকরা নয়। কোটি কোটি টাকার অবিক্রিত পাটপণ্য বিক্রির দায়িত্ব কর্মকর্তাদের। প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলের অবসরপ্রাপ্ত এবং অবসায়নকৃত শ্রমিকদের পাওনা টাকা শ্রমিকদের একাউন্টে যাবে। কোন নেতা বা দালাল এ টাকা নিয়ে শ্রমিকদের ঠকাতে পারবে না। শ্রমিকের ন্যায্য পাওনার চেয়ে ১৩ থেকে ২৭ শতাংশ টাকা তাদের বেশি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) সুবাস চন্দ্র সাহা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড.খঃ মহিদ উদ্দিন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, র্যাব-৬ এর পরিচালক লেঃ কর্ণেল রওশনুল ফিরোজ, বিজেএমসি’র সচিব এএফএম এহতেশামুল হক, খুলনার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, শিল্প পুলিশ-৬ এর পরিচালক মোঃ নাজমুল ইসলাম এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পাট) মোঃ আবু বকর সিদ্দিক। খুলনা শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এসময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, সুবিধাভোগী ও সাধারণ শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী প্লাটিনাম জুবলি জুট মিলস লিঃ এর অবসরপ্রাপ্ত ও অবসায়নকৃত (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুভিধাসহ) ৪৫ জন শ্রমিকের মাঝে চেক ও সঞ্চয়পত্র হস্তান্তর করেন। আজ হস্তান্তর করা টাকাসহ অবশিষ্ট শ্রমিকদের পাওনা দুইশত ষোল কোটি ২৮ লাখ ছয় হাজার ২৪ টাকা শ্রমিকদের ব্যক্তিগত একাউন্টে ও দুইশত ১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ছয়শত ৭১ টাকা তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।