শ্যামনগর প্রতিনিধি:শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আক্তারুজ্জামান মিলনকে ষ্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক জরুরী বার্তায় বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাকে ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলায় যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বহুল সমালোচিত শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে শিক্ষা অধিদপ্তর কতৃক বরাদ্দকৃত অর্থ বিদ্যালয়সমুহের অনুকুলে ছাড়করণের ক্ষেত্রে প্রায় অর্ধ্ব কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগ ওঠে।
এসময় হাবিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাইসহ অসংখ্য প্রধান শিক্ষক সরাসরি শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ঘুষ আদায়ের বিষয়ে। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে স্লিপ খাতের বরাদ্দ থেকে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন সরবরাহের অজুহাতে আলোচিত ঐ কর্মকর্তা ১৯১টি বিদ্যালয়ের তরফ থেকে সাতাশ লাখ টাকা অর্থ হাতিয়ে নেয়।
অভিযোগ রয়েছে শ্যামনগর উপজেলার সাবেক ও বর্তমান মুষ্টিমেয় শিক্ষক নেতার সহায়তা নিয়ে বিদায়ী শিক্ষা কর্মকর্তা গত তিন বছরে কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। এক ব্যবসায়ী শিক্ষক নেতার সাথে যোগসাযশে আক্তারুজ্জামান গত তিন বছরে শ্যামনগর উপজেলায় শিক্ষকদের বদলী বানিজ্যের সুযোগ নিয়ে আরও প্রায় অর্ধ্ব কোটি টাকা বানিজ্য করেছে বলেও অভিযোগ।
জানা যায় দুর্গম এলাকায় দুই থেকে তিন শত পর্যন্ত শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত বিদ্যালয়সমুহ থেকে শিক্ষকদের টাকার বিনিময়ে উপজেলা সদরসহ সুবিধাজনক স্থানে বদলীর সুযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এমনকি শ্যামনগর শিশু শিক্ষা নিকেতনসহ আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হার ১:৩০ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে নুতন নুতন শিক্ষককে যোগদানের সুযোগ দিলেও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনুপাতিক হার ১:১০০ থাকা সত্ত্বেও তাতে তিনি কর্ণপাতই করতেন না।
জানা গেছে মুষ্টিমেয় শিক্ষক নেতাদের নিয়ে আলোচিত শিক্ষা কর্মকর্তা সিন্ডিকেট গড়ে গত কয়েক বছরে শ্যামনগর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে বানিজ্যিক খাতে পরিনত করেছিলেন।
একইভাবে সম্প্রতি তার অর্থ কেলেংকারির বিষয় সামনে চলে আসায় কয়েক সাংবাদিক নেতাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়েছিলন। এমনকি কয়েক শিক্ষক নেতা এবং সংবাদকর্মীকে কাজে লাগিয়ে কোটি টাকা ঘুষ বানিজ্যের বিষয়কে ধামাচাপা দেয়ার জোর তৎপরতাও শুরু করেছিলেন আলোচিত শিক্ষা কর্মকর্তা।
তবে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যাবশিত হয় মঙ্গলবার তার ষ্ট্যান্ড রিলিজ এর নির্দেশ আসার পরক্ষণে।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার তার মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।