দেশের যেসব সড়কে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে, সেসব স্থান চিহ্নিত করে সংস্কার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের অনুষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বেশির ভাগ জায়গায় ওভারপাস বা আন্ডারপাস করে দিচ্ছি, যাতে দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে। ৪৫৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার লেন বা কোথাও ছয় লেন এবং তার সঙ্গে সঙ্গে ধীরগতিসম্পন্ন গাড়ি যেন চলাচল করতে পারে বা ভ্যান-রিকশা এগুলো চলাচল করতে পারে, সে ব্যবস্থা করেই লেনগুলো উন্নত করা হয়েছে। ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান আছে। ভবিষ্যতে এগুলো আরও সম্প্রসারণ করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে আমি অনুরোধ করব, সড়কে যোগাযোগে যেমন নিরাপত্তা প্রয়োজন, সেইসঙ্গে সড়ক নির্মাণের সময় প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেন বজায় থাকে, সেদিকেও আমাদের লক্ষ রাখতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে আমাদের কালভার্ট করতে হয়, ব্রিজ করতে হয়। আর আমাদের মাটি হলো দোআঁশ মাটি। আমাদের এই মাটিতে কোনো কিছু তৈরি করতে হলে খরচ অনেক বেশি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সড়ক নির্মাণের সময় অনেকে প্রশ্ন করেন, অমুক দেশে খরচ এত কম, আমাদের দেশে এত বেশি কেন। তাদের অনুরোধ করব, আমাদের দেশের মাটি আপনারা একটু পরীক্ষা করে দেখবেন। আর যে দেশের কথা বলবেন, তাদের মাটিটাও পরীক্ষা করে দেখবেন যে সেখানে সড়ক নির্মাণ করতে কত খরচ হয়, আর আমাদের দেশে কত খরচ হয়। কাজেই এগুলোও আমাদের বিবেচনা করতে হবে। দোষ দিলে হবে না, বাস্তবতাটা মেনে নিতে হবে।’
দেশের উন্নয়নের জন্য সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশু করণীয় কী, সেগুলোর ক্ষেত্রে যেমন সুনির্দিষ্ট করে কাজ করে যাচ্ছি, সেইসঙ্গে মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও নিয়েছি। ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কী রকম বাংলাদেশ হবে, কী করে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করব—এরই মধ্যে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পথে যাত্রা শুরু করেছি। যে তিনটি ক্রাইটেরিয়া পূর্ণ করলে এটি অর্জন করা যায়, সেগুলো আমরা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের কাজে একটু ধীরগতি হয়েছে। তবুও আমরা মনে করি, আমরা এগুলো অর্জন করে যেতে পারব। আমরা সেভাবেই কাজ করছি এবং এই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি।’
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এটা একটা বদ্বীপ। বদ্বীপটা কীভাবে উন্নত করা যায় এবং আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধররা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যারা আসবে, তাদের জীবনটা যেন সুন্দর হয়, সেদিকে লক্ষ রেখেই কিন্তু আমরা এই পরিকল্পনা নিয়েছি। সেইসঙ্গে আমরা নিয়েছি ডেল্টা প্ল্যান-২১০০। অর্থাৎ শত বছরের একটা পরিকল্পনা আমরা রেখে যাচ্ছি। হয়তো সময়ের তাগিদে বা প্রযুক্তির প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের জন্য সময়ে সময়ে সংস্কার করা যাবে, পরিবর্তন করা যাবে। তবে একটা সুনির্দিষ্ট কাঠামো ও লক্ষ্য থাকলে একটা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ। এই কাজটি আমরা করে যাচ্ছি।’