পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:মা পরকীয়া করে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ ছেলে দুঃসম্পর্কের চাচাকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করিয়েছেন। নিহত নবী হোসেনের লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহ পর শুক্রবার রাতে নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ থেকে দুই যুবককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ তথ্য জানিয়েছে। গ্রেপ্তার দুই যুবকের নাম আশিক মিয়া (২১) ও সুমন মিয়া (২৪)। গত ১৭ই অক্টোবর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিখাইন এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পটিয়া থানা পুলিশ। উদ্ধার করা লাশটির গলায় গামছা পেঁচানো ও পায়ের রগ কাটা ছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ।পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, ১৭ই অক্টোবর লাশটি উদ্ধারের পর পিবিআই আঙুলের ছাপ মিলিয়ে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে। নবী হোসেন নামে ওই যুবকের বাড়ি ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের পুরানচর এলাকায়। লাশ উদ্ধারের পর নবী হোসেনের ভাই চট্টগ্রামে লাশ শনাক্ত করেন এবং পটিয়া থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। পিবিআই স্ব-প্রণোদিত হয়ে মামলার তদন্তভার নিয়ে নরসিংদী থেকে আশিক ও কিশোরগঞ্জ থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে।
পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। এসপি নাজমুল বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের হোতা সাব্বির নামে এক যুবক। তিনি সম্পর্কে নিহত নবী হোসেনের ভাতিজা। তার বাড়িও ভৈরবে। ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে সব্বির ভাড়াটে খুনি দিয়ে নবী হোসেনকে খুন করায়।
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, সাব্বিরের বাবা প্রবাসী। সে সুযোগে নবী হোসেন তার মায়ের সাথে পরকীয়া জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। সাব্বির বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে নবী হোসেনকে খুনের পরিকল্পনা করে। সেজন্য তূষার নামে একজনের সাথে ৬০ হাজার চুক্তি করে সাব্বির। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৫ই অক্টোবর মাইক্রোবাসে করে ভৈরব থেকে নবী হোসেনকে অপহরণের চেষ্টা করে গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিরা। কিন্তু তাতে তারা ব্যর্থ হয়। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ায় তারা পরদিন মাইক্রোবাসের পরিবর্তে প্রাইভেটকার নিয়ে নবী হোসেনকে অপহরণ করে। পিবিআই কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, অপহরণের পর নবী হোসেনকে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসার পথে কুমিল্লায় মহাসড়কে মুখে গামছা বেঁধে গলা টিপে হত্যা করে। পাশাপাশি মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য নবী হোসেনের পায়ের রগ কেটে দেয়। হত্যার পর নবী হোসেনের লাশটি প্রাইভেট কারে পায়ের নিচে রেখে তারা কক্সাবাজারের দিকে রওনা করে। পথিমধ্যে পটিয়ায় লাশটি মহাসড়কের পাশে ফেলে দেয়। লাশ ফেলে তারা কক্সবাজার ভ্রমণ করে ভৈরবে ফিরে যায় বলেও জানান তিনি। এদিকে এই ঘটনায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকারের পাশাপাশি আগের দিন অপহরণ চেষ্টার মাইক্রোবাসটিও পুলিশ আটক করে।