প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১০০ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। দেশে গত ১৫ এপ্রিল থেকে করোনায় চিকিৎসকদের মৃত্যু শুরু হয়। বৃহস্পতিবার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সেলিম আহমেদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চিকিৎসকদের মৃত্যুর তালিকা ১০০ স্পর্শ করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সেলিম আহমেদের। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, ডা. সেলিম আহমেদ ১৯৯৭-৯৮ সালে বিএমএর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। কর্মজীবনে দীর্ঘ সময় ইরানে কাটিয়েছেন। এরপর দেশে ফিরে নিয়মিত রোগী দেখতেন।
জানা গেছে, করোনায় দেশে প্রথম চিকিৎসকের মৃত্যু হয় গত ১৫ এপ্রিল। ওইদিন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন আহমদের (৪৭) মৃত্যু হয়। ডা. মঈন উদ্দীন আহমেদ করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়েই সংক্রমিত হয়েছিলেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে চিকিৎসক সমাজসহ সব শ্রেণি-পেশা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিএমএ’র তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসের মধ্যে এই অক্টোবর মাসে সবচেয়ে কমসংখ্যক চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুর ঘটনাও এ মাসে কম। জুলাই মাস থেকে চিকিৎসক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, তবে বন্ধ হয়নি। জুলাই মাসে ১৫ জন, আগস্টে ১২ জন, সেপ্টেম্বরে ৮ জন ও অক্টোবরে ৭ জন চিকিৎসক মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
বিএমএ’র তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সারা দেশে ২ হাজার ৮৫৩ জন চিকিৎসক করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে এপ্রিল মাস পর্যন্ত আক্রান্ত হন ৩৯২ জন। জুন মাসে ৮৪২, জুলাইয়ে ৮৯৫ ও আগস্টে ৫৫৯ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হন। সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে ১৩৮ জন চিকিৎসক করোনায় সংক্রমিত হন। আর অক্টোবরে ২৭ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুব কাছের মানুষটিও যখন করোনার সংক্রমণের ভয়ে স্বজনকে ফেলে চলে গেছেন, তখন তার পাশে দাঁড়িয়েছেন চিকিৎসকরা। দেশের বেশিরভাগ মানুষ যখন ঘরবন্দি, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিরামহীনভাবে রোগীদের সেবা দিয়েছেন তারা।