ক্রাইমবাতারিপোট: ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি, অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক বলেছেন, ‘গত নির্বাচনের পর থেকেই দেশ আমলাদের কবজায় চলে গেছে। এখন রাজনীতিবিদদের ভূমিকা সংকুচিত, নেই বললেই চলে। সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে আমলারা।’ দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এমপি। এলাকায় আমার কাজ কি? স্কুল, কলেজের পরিচালনায় জনপ্রতিনিধিরা নেই। আগে ঈদে এমপিদের শাড়ি-কাপড় দেয়া হতো গরীব মানুষদের দেয়ার জন্য। এখন সেটাও দেয়া হচ্ছে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে। এখন জেলার দায়িত্বে সচিবরা, তাহলে রাজনীতিবিদরা কোথায়? সাবেক এই স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের নিয়ন্ত্রণ যখন প্রশাসন ক্যাডারের হাতে, তখন তারা তো অন্য ক্যাডারের উপরও নিয়ন্ত্রণ করবেই। আগেও প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্যান্য পেশাজীবী ক্যাডারের বিরোধ ছিলো। কিন্তু এখন তা প্রকট হয়েছে।’
প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন, ‘বলা হচ্ছে চিকিৎসকরা প্রশাসন চালাতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ৪টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার এনেছে। এটা তো চিকিৎসকরাই এনেছে।’ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘আমলারা শুরুতেই একটা সমস্যা করে রেখেছে। আমি ডাক্তার। আমার পদোন্নতির জন্য আমাকে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে হয়। পড়াশুনা করতে হয়। একজন আমলা অনার্স বা মাষ্টার্স করে চাকরিতে ঢুকেন, তাকে কোন উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পদোন্নতির জন্য যোগ্য হতে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আমি চিকিৎসক, আমাকে কোন প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। আমি হাড় জোড়া লাগাতে পারি। কিন্তু আমাকেই যখন পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক করা হলো, তখন যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। প্রক্রিয়ার মধ্যেই চিকিৎসকদের প্রশাসনের জন্য অযোগ্য করে রাখা হচ্ছে।’ অধ্যাপক রুহুল হক বলেন, ‘আমি মনে করি স্বাস্থ্য ক্যাডারকে ঢেলে সাজাতে হবে। এখানে যারা প্রশাসনিক দায়িত্ব নেবেন, তাদের আলাদা প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যেমন, প্রশাসন ক্যাডারে দেয়া হয়। তাহলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে তারা দক্ষ হবে।’
অধ্যাপক হক বলেন, ‘ডাক্তারদের মধ্যে থেকেও তো অনেকে ফরেন সার্ভিসে এবং প্রশাসন ক্যাডারে গেছেন। তারা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। তাই স্বাস্থ্য ক্যাডারে দুটো শাখা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবে। না হলে প্রশাসন ক্যাডার সর্বত্রই নাক গলাবে।’