মিয়ানমারের শাসক দল সাধারণ নির্বাচনে নিজেদের জয় দাবি করেছে। অং সান সুচির দল এনএলডির দাবি, তারা এরইমধ্যে প্রয়োজনীয় ৩২২টি আসনেই জয় নিশ্চিত করেছে। তবে এখনো নির্বাচন কমিশন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ঘোষণা করা হয়নি। এ খবর দিয়েছে এবিসি নিউজ।
খবরে জানানো হয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর এটিই দ্বিতীয় গণতান্ত্রিক নির্বাচন। প্রথম দফায়ও জয় পেয়েছিল এনএলডি। দলটি নিজ দেশের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী নানা অভিযোগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলটির ভাবমূর্তি বেশ খারাপ।
গত রোববারের নির্বাচনে নিজেদের জয় দাবি করে দলটির মুখপাত্র মিও নুন্ট বলেন, অং সান সুচির নেতৃত্বে এনএলডি এরইমধ্যে ৩২২ আসনে জয় লাভ করেছে। এ জন্য আমরা দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই।
দলের জন্য, দেশের মানুষের জন্য এই জয় অনেক উৎসাহ প্রদান করবে। ধারণা করা হচ্ছে, শীঘ্রই নির্বাচন কমিশনও এনএলডির জয়ের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে।
এর আগে এই নির্বাচনের ফল মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশটির সেনাপ্রধান। এই নির্বাচনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে। বরাবরের মতোই সেনাবাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে হবে জয়ী দলকে। জয়ের খবরে অং সান সুচির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক। তারা নানা রকম স্লোগান দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, দেশে অং সান সুচির জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও এক সময়ে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের আইকন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই নেত্রীর আন্তর্জাতিক মর্যাদায় নাটকীয় পতন ঘটে। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় তিনি যে অবস্থান নিয়েছেন সে জন্য সারা বিশ্ব থেকে তার প্রতি নিন্দা ও ঘৃণা জানানো হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নতুন করে নৃশংসতা শুরু করে মিয়ানমারের সেননাবাহিনী। গণধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন সহ এমন অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। এর ফলে বাধ্য হয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এ নিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় সেনাবাহিনীর হয়ে সাফাই গেয়েছেন অং সান সুচি। বিশ্ব অবাক হয়ে দেখেছে কিভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকারের একজন চ্যাম্পিয়ন তার নিজের মর্যাদাকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষে, অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে পারেন।