কে হচ্ছেন হেফাজতের আমির?

আগামীকাল রোববার বহুল আলোচিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় আয়োজিত সম্মেলনে সারা দেশের কাউন্সিলরদের ভোটে আমির ও মহাসচিব নির্বাচিত হবেন। সর্বজন গ্রহণযোগ্য আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর কে হচ্ছেন আমির তা নিয়ে এখন আলেম-ওলামাদের মধ্যে চলছে সরব আলোচনা। তবে বর্তমান মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আমির এবং আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী মহাসচিব হতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ। হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে আমির ও মাদরাসার তৎকালীন সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে মহাসচিব করে হেফাজতের ২২৯ সদস্যের মজলিসে শূরা কমিটি গঠন করা হয়েছিল সে সময়। ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে হেফাজতের আত্মপ্রকাশ হলেও সংগঠনটি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৪ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর অবরোধের মাধ্যমে।

চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আল্লামা শাহ আহমদ শফী ইন্তেকাল করায় আমিরের পদটি শূন্য হয়। দেশ-বিদেশে এ পদ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক আলোচনা। আল্লামা আহমদ শফী বেফাকেরও সভাপতি ছিলেন। তার মৃত্যুর কিছু দিনের মধ্যেই সম্মেলনের মাধ্যমে বেফাকের সভাপতি ও মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়েছে; কিন্তু বর্তমানে হেফাজতের কর্মকাণ্ড কিছুটা শিথিল থাকায় এ নিয়ে তেমন সরব দেখা যায়নি আলেমদের। তা ছাড়া হাটহাজারী মাদরাসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের কারণেও হেফাজত নেতাদের মধ্যে কিছুটা ফাটল দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই ১৫ নভেম্বর রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হেফাজতের সম্মেলন। যেখানে নির্ধারিত হবে আমির ও মহাসচিবসহ ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি। সারা দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় সাড়ে তিন শ’ কাউন্সিলর এতে ভোট প্রদান করবেন।

জানা যায়, হেফাজতের আমির ও মহাসচিব নির্বাচনে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। তবে বেশ কয়েকজন আমির পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমান মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নাম সবার উপরে রয়েছে। এরপরই আছেন মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীসহ বেশ কয়েকজনের নাম। একইভাবে মহাসচিব পদের জন্য ১০-১২ জনের নাম আলোচিত হচ্ছে। তবে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আমির হতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এ ছাড়া নূর হোসাইন কাসেমী আমির পদের জন্য আলোচনায় থাকলেও তাকে মহাসচিব করা হতে পারে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া খেলাফত আন্দোলনের আমির আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ঢাকা মহানগর সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।

এ দিকে হেফাজতের সম্মেলন ঘিরে বিভক্তি আরো প্রকট হয়ে পড়েছে। সম্মেলনে সিনিয়র আলেম মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মধুপুরের পীর আব্দুল হামিদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও হেফাজতের ঢাকা মহানগরের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাসনাত আমিনীকে সম্মেলনে দাওয়াত দেয়া হয়নি। এ ছাড়া সম্প্রতি চট্টগ্রামে হেফাজতের সম্মেলন ঘিরে মিছিল সমাবেশ করতে দেখা গেছে কিছু আলেমকে। তারা লিফলেটের মাধ্যমে হেফাজতের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে বক্তব্য তুলে ধরেছেন।

Check Also

বাংলাদেশে একটি সফল ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখি: মুহাঃ ইজ্জতউল্লাহ

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য অধ্যক্ষ মুহাঃ ইজ্জতউল্লাহ বলেছেন, প্রত্যেক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।