ক্রাইমবাতা রিপোট: সাতক্ষীরা : ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোলজ সাতক্ষীরায় ত্রাণ বিতরণ নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এক টুইট বার্তা তিনি বলেন, কিছু রাজনীতিক ত্রাণ সাহায্যকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। গত বৃহস্পতিবার টুইটারে তিনি এই অভিযোগ তোলেন।
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোলজ বলেন, আমি জানতে পেরে হতাশ হয়েছি, স্থানীয় কিছু রাজনীতিক আমাদের খাদ্য ত্রাণ বিতরণে নিজেদের স্বার্থে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে আমরা তা যথাযথভাবে বিতরণ করেছি। শেষ পর্যন্ত খাদ্যগুলো অভাবগ্রস্ত লোকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, জার্মান দূতাবাস সাতক্ষীরা জেলায় আশাশুনি থানার কালিবাজার এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণসহায়তা হিসেবে খাদ্য বিতরণ করে। গত ১৫ নবেম্বর সেখানে ত্রাণ বিতরণ করতে জার্মান রাষ্ট্রদূত নিজেই গিয়েছিলেন। মীনা ইনক্লুসিভ সোসাইটি ফর ডেভেলপমেন্ট নামে একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ছয় হাজার পরিবারের মধ্যে ওই ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছিল ঢাকার জার্মান দূতাবাস। সেই কর্মসূচি নিয়ে অভিযোগ ওঠে। তবে স্থানীয় রাজনীতিক ও কর্মকর্তারা অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৫ নভেম্বর জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোলৎজ নিজেও যোগ দেন।
যদিও সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলায় এ ত্রাণ বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন সেখানকার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন সুলতানা।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ত্রাণ বিতরণের জন্য তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণের সব কাজ করেছে দূতাবাসের মনোনীত এনজিও।
‘আমরা বিকেলের দিকে ঝামেলা শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম, শেষ দিকে যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী ছিলো তা বেশি লোককে দেয়ার জন্য কমিয়ে ভাগ করে দেয়া হচ্ছে। তবে কোনো ঝামেলা আমাদের চোখে পড়েনি।’
শাহীন সুলতানা বলেন, আসলে শেষের দিকে অনেক বেশি লোকজন চলে এসেছিলো। তবে দূতাবাসের মনোনীত এনজিওই সব তদারকি করেছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল বলছেন, প্রতিটি ত্রাণের প্যাকেটে লেখা ছিলো ২৫ কেজি।
‘কিন্তু শেষ দিকে ১২ কেজি করে দেয়া হলে যে এনজিওর মাধ্যমে দেয়া হচ্ছিলো তাদের স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যেই এটা নিয়ে কথা ওঠে। তখন জানানো হয় যে বেশি লোকজনকে দেয়ার জন্য প্যাকেট ভাগ করে দেয়া হচ্ছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
মি. শাকিল বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা কেউ এর ধারেকাছেও যায়নি।
‘তারা ডেকেছিলো বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে পরে আবার চলে এসেছিলাম। শেষ দিকে প্যাকেটের পরিমাণে কম থাকায় তাদের স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। পরে এসি ল্যান্ডসহ অন্যরা গিয়েছেন। আর কোনো সমস্যার কথা শুনিনি’।