ক্রাইমবাতা রিপোট: স্থানীয় সরকারপর্যায়ে নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় দেশের ৬১টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব পৌরসভায় আগামী ২০ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বলে জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো: আলমগীর। তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ২৯টি পৌরসভায় এবং ব্যালেটে ৩২টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করা হবে। আর প্রথম ধাপের নির্বাচনে বিভিন্ন পদে এক হাজার ৩৩৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গতকাল আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে দ্বিতীয় দফায় তফসিল ঘোষণা করেন ইসির এই জ্যেষ্ঠ সচিব। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ২২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৯ ডিসেম্বর। ইসি সচিব জানান, ২৯ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।
দ্বিতীয় ধাপের ইভিএমে ভোট গ্রহণের ২৯টি পৌরসভা হলোÑ কাজিপুর, তারাব, শরীয়তপুর, মাগুরা, সাভার, বীরগঞ্জ, নজিপুর, ফরিদপুর (পাবনা), কাকনহাট, কুমারখালী, সারিয়াকান্দি, জগন্নাথপুর, পিরোজপুর, কেন্দুয়া, গাংনী, শৈলকুপা, খাগড়াছড়ি, সৈয়দপুর, আড়ানী (রাজশাহী), ধনবাড়ি, চান্দিনা, দাগনভূঞা, কুলিয়ারচর, মনোহরদী, সান্তাহার, বসুরহাট এবং মংলা পোর্ট।
ব্যালেটের ৩২টি পৌরসভা হলোÑ সন্দ্বীপ, মোহনগঞ্জ, কুষ্টিয়া, কুলাউড়া, মিরপুর (কুষ্টিয়া), নাগেশ্বরী, সুন্দরগঞ্জ, দিনাজপুর, কমলগঞ্জ, ভেড়ামারা, গাইবান্ধা, বিরামপুর, ভাঙ্গুড়া, সাঁথিয়া, সুজানগর, সুনামগঞ্জ, মাধবপুর, নবীগঞ্জ, বোয়ালমারী (ফরিদপুর), ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ), নলডাঙ্গা, ঈশ্বরদী, শেরপুর (বগুড়া), ভবানীগঞ্জ, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, ছাতক, গোপালপুর, লামা, গুরুদাসপুর, সিরাজগঞ্জ, রায়গঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং মুক্তাগাছা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা করেছে। এখানে তফসিল দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কেবল ভোটের দিন ঘোষণা করতে হবে। কমিশনে সিদ্ধান্ত হলে ভোটের তারিখ জানানো হবে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ দিকে ভোট হতে পারে। তবে কোনো কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে জানুয়ারিতে হবে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, বতর্মানে দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। নির্বাচন উপযোগী পৌরসভার সংখ্যা ২৫৯টি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হবে ১১টি পৌরসভার। ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে ১৮৫ পৌরসভার। এরমধ্যে ১ ও ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে চারটি, ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে ৪৬টি এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে ১৩৩ পৌরসভার। মার্চে শেষ হবে ২৮ পৌরসভার মেয়াদ। এপ্রিল থেকে নভেম্বরে শেষ হবে ৩০টির মেয়াদ।
প্রথম দফার ২৫টির তথ্য : আর ইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, চার ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের ৩২৯টি পৌরসভা নির্বাচন। প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভা নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন এক হাজার ৩৩৩ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে মেয়র পদে ১১২ জন, সংরক্ষিত নারী আসনে ২৮৩ এবং সাধারণ বা কাউন্সিলর পদে ৯৩৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
ইসির তফসিল অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ের এসব পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করা হবে ২৮ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ১ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ৩ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১০ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য, ইসির তথ্যানুযায়ী, আইন অনুযায়ী পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি প্রায় ২৫০টিরও বেশি পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর একযোগে ২৩৪টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। একই বছর ২৪ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। ওই সময় তফসিল থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত ৩৬ দিন সময় দিয়েছিল কমিশন