ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্লাহ চৌধুরী হত্যা মামলায় সাত আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামিরা হলেন গুলজার হোসেন, শম্পা, আশিক, শিহাব আহম্মেদ ওরফে শিবু, আহসানুল কবির ইমন, তাজুল ইসলাম তানু, জাহাঙ্গীর খাঁ ওরফে জাহাঙ্গীর এবং রফিকুল ইসলাম ওরফে আমিন ওরফে টুণ্ডা আমিন। এদের মধ্যে আসামি শম্পাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বাকি সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া আরেকটি ধারায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাত বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের জেল দেয়া হয়েছে।
এর আগে সকালে কারাগারে আটক তিন আসামি শম্পা, জাহাঙ্গীর ও আহসানুল কবীর আদালত হাজির করা হয়। এরপর রায় পড়া শেষে বেলা ১টা ৮ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
এদিকে জামিনে যাওয়ার পর অপর পাঁচ আসামি পলাতক থাকায় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন গুলজার হোসেন, আসিফ, শিহাব আহম্মেদ ওরফে শিবু, তাজুল ইসলাম তানু ও রফিকুল ইসলাম ওরফে আমিন ওরফে টুণ্ডা আমিন। এ মামলায় আসামি আসিফ ও শম্পা আদালতে দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন।
সাত বছর আগের ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন মুক্তিযোদ্ধা ও ইউপি চেয়ারম্যান আতিক উল্লাহ চৌধুরী। পরদিন ১১ ডিসেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর এলাকার একটি হাসপাতালের পাশ থেকে তার আগুনে পোড়া বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আসামিরা তাকে হত্যা করে এবং লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে পুড়িয়ে ফেলে রাখে। পরে তার সাথে থাকা কাগজ ও এটিএম কার্ড দেখে লাশ শনাক্ত করেন নিহতের ছেলে সাইদুর রহমান ফারুক চৌধুরী।
ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে সাইদুর রহমান ফারুক চৌধুরী ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর পর একই বছরের ২ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এ মামলা চলাকালে বিভিন্ন সময় মোট ২১ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।