আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র সাতক্ষীরায় আ’লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে : আহত ১০

ক্রাইমবাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: মৃত ব্যক্তির জানাজায় না যেয়ে মিলাদে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলায় উভয়পক্ষের ১০জন সমর্থক গুরুতর জখম হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদরের ঘোনা গ্রামের বিজিবি ক্যাম্প পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, ঘোনা গ্রামের লাভলু রহমানের ছেলে রাহুল হোসেন (১৮), একই গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪০), সামছুদ্দিন গাজীর ছেলে মাহাবুবর রহমান (৪৮), আবুল হোসেন গাজীর ছেলে অসমতুল্যাহ গাজী (২৮), আক্তার দালালের ছেলে ওজিয়ার রহমান (৪০), সৈয়দ আলী সরদারের ছেলে আবুল হোসেন সরদার (৫০), আকিমউদ্দিন মিস্ত্রীর ছেলে রইচউদ্দিন মিস্ত্রী (৩৮)।

স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা সাথে  স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদেরের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। কিছুদিন আগে এনিয়ে বাঁশিয়াপাড়ায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০জন আহত হয়। মামলা হয় দু’টি।

স্থানীয়রা আরও জানান, ঘোনা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মোলাপাড়ায় সম্প্রতি সাবেক ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান মারা গেলে সেখানে ইচ্ছা থাকার পরও চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা সেখানে যেতে পারেননি। সাবেক ওই ইউপি সদস্যের দোয়া অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদে বুধবার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের ও ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশাকে দাওয়াত দেন মৃতের স্বজনরা। বুধবার সদর থানার উপপরিদর্শক মনিরসহ কয়েকজনকে নিয়ে ওই মিলাদে যান চেয়ারম্যান মোশা। মিলাদ অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে আব্দুল কাদেরের সমর্থকরা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা জানাজায় আসেনি অথচ কেন মিলাদে এলো তা নিয়ে শোরগোল শুরু করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল কাদেরের সমর্থকরা চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে দেয়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জিয়াউর রহমান জানান, ঘোনা খালের পাশে বিজিবি ক্যম্পের নিকটে মাছের সেট এলাকায় তারা বসবাস করেন। সে কারণে তারা ওই মাছের সেটে কাজও করেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের ও করিম, কাদেরের মামাত ভাই আলীপুরের শফিকুল ইসলাম, ঘোনার তোতা, শাহীনুজ্জামান ডালিম, কালাম, জামায়াত নেতা অলিয়ার রহমানসহ ৩০-৩৫জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হাতে পাখিমারা বন্ধুক, দা, লাঠি ও লোহার রড নিয়ে মাছের সেট এলাকায় হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনিসহ কয়েকজন বাড়িতে চলে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকেসহ রাহুল, মাহাবুব, আসমতুলাহ, ওজিয়ার রহমান, আবুল হোসেন ও রইচউদ্দিনকে পাখি মারা এয়ারগানের গুলি ছুঁড়ে, লোহার রড, বাঁশের লাঠি ও দা দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল কাদের জানান, চেয়ারম্যান সমর্থক আনারুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ২৬ মিনিটে তাকে মোবাইলে বলে যে ক্যাম্পের মোড়ে কোন আওয়ামী লীগ নেতা আসলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হবে। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্প মোড়ে গেলে উভয়পক্ষের হাতহাতি হয়েছে। এতে তাদেরও কয়েকজন জখম হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।