কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাষ্কর্য ভাঙচুরের অভিযোগে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-শহরের জুগিয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার মাদরাসা ইবনি মাস্উদ (রাঃ) এর ছাত্র এবং শিক্ষক। এদের মধ্যে মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠন (১৯) ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০) মাদরাসাটির হেফ্জ বিভাগের ছাত্র এবং মো. আল আমিন (২৭) ও মো. ইউসুফ আলী (২৬) শিক্ষক। শনিবার দিবাগত রাতে এবং সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন’র দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মুহিদ উদ্দীন।
এদিকে, কুষ্টিয়া পুলিশের দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাওলানা মামুনুল হক ও সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আবু বক্কর ও সবুজ ইসলাম গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন। ঘটনার রাতে তারা দু’জন একসঙ্গে মাদরাসা থেকে হেঁটে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে পাঁচ রাস্তার মোড়ে যান।
ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যবহৃত বাঁশের মই বেয়ে দু’জন ওপরে ওঠেন। এরপর সবুজ পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করেন। দু’জন মিলে ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। ৮ মিনিট ধরে ভাঙচুরের পর তারা আবার হেঁটে মাদরাসায় ফিরে যান। শনিবার সকালে বিষয়টি মাদরাসার শিক্ষক আল আমিন ও ইফসুফকে জানায় তারা। এসময় ওই দুই শিক্ষক তাদের (ছাত্রকে) পালিয়ে যেতে বলেন। দুই ছাত্র পরে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরো জানিয়েছে, ভাষ্কর্য ভাংচুরকারী আবু বক্করকে (১৯) কে মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের মৃধাপাড়া এলাকা থেকে ও সবুজ ইসলামকে দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামের গোলাবাড়ীয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে দুই শিক্ষককে মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া পৌরসভার উদ্যোগে শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে গত মাসে। একই বেদিদে বঙ্গবন্ধুর তিন ধরণের তিনটি ভাষ্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই বেদিদে জাতীয় চার নেতার ভাষ্কর্যও থাকবে। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাষ্কর্য স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের পথে। হঠাৎ করে শুক্রবার দিবাগত রাতে এই ভাষ্কর্যটির ডান হাত, পুরো মুখ মন্ডল ও বাঁ হাতের অংশ বিশেষ ভেঙে ফেলে দুবর্ৃৃত্তরা।