ভাস্কর্য নিয়ে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসামীদের মুক্তি চেয়েছে  জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার জাতির জনকের ভাস্কর্য ভাঙ্গার ঘটনায় অভিযুক্তদের মুক্তির দাবী করেছে জামায়াত।

বিবৃতি দিয়ে ‘আলেমদের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ’ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে জামায়াতও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ‘ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাণ শরিয়তে চরমভাবে নিষিদ্ধ। ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেলারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভাস্কর্য ও মূর্তি বিরোধী বক্তব্য দেয়ার কারণে দেশ বরেণ্য আলেমে দ্বীন হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। একই সময়ে মাওলানা মামুনুল হককে আসামি করে আরো একটি মামলা করা হয়েছে। আমরা দেশ বরেণ্য এসকল আলেমে দ্বীনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জামায়াত বলছে, শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে মূর্তি ও ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের নামে মামলা দায়েরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাণকে ইসলামী শরিয়তে চরমভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশের আলেম, ওলামা ও আপামর মুসলিম জনতা ভাস্কর্য ও মূর্তির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে। দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল মুসলিম জনতা ও ইসলামী শরীয়তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ভাস্কর্য নির্মাণের মত গর্হিত কাজ থেকে সরকার বিরত থাকবেন। কিন্তু উল্টো দেশ বরেণ্য আলেমদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা মনে করি ইসলাম ও ইসলামী রাজনীতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে শুধুমাত্র রানৈতিকভাবে হয়রানি করার হীন উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে এসকল মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর আগে অপর এক বিবৃদিতে জামায়াতের আমীর ডাঃ শাফিকুর রহমান বলেছেন, সাম্প্রতিককালে মূর্তি নির্মাণ নিয়ে ইসলামী আদর্শ ও শরীয়াহ বিরোধী এক অনাকাক্সিক্ষত বিতর্কের অবতারণা করা হয়েছে। কারো কারো পক্ষ থেকে ভাস্কর্য ও মূর্তি এক নয় বলে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, মূর্তি ও ভাস্কর্য একই। ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাণ করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কোনো প্রাণীর মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি করা ইসলামে শির্ক বলে গণ্য করা হয়েছে। কিছু লোক আল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহকে ভাস্কর্য বলেছেন। নির্বোধ ব্যক্তিদের এটা বাড়াবাড়ি।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দলটির আমীর আরো বলেছেন, কোনো কোনো ব্যক্তি ভাস্কর্যের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করতে গিয়ে অতীতের কিছু উদাহারণ টানেন। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে এটা সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য এবং হারাম। অন্য ধর্মাবলম্বীগণ তাদের ধর্মীয় কর্মকা-ের অংশ হিসেবে উপাসনালয়ে কিংবা নিজ নিজ স্থাপনায় মূর্তি সংরক্ষণ করলে তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু উন্মুক্ত স্থানে মূর্তি বা ভাস্কর্য স্থাপনের কোনো অনুমতি ইসলাম দেয়নি।

কেউ কেউ মূর্তি ও ভাস্কর্য নির্মাণকে বৈধ করার এবং এ ব্যাপারে যুক্তি তুলে ধরার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন যা মুসলিম জাতির জন্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো প্রাণীর মূর্তি নির্মাণ করা কবিরা গুনাহ ও হারাম। মূর্তি সংগ্রহ, মূর্তি নির্মাণ, এবং মূর্তির বেঁচাকেনা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।