স্বামীদের মুক্তির দাবিতে ৫ স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লা সংবাদদাতা:  কারাগারে থাকা ৬ ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনটি করেছেন ওই ৬ ব্যক্তির মধ্যে ৫ জনের স্ত্রী এবং একজনের মেয়ে।মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর একটি পার্টি সেন্টারে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি খন্দকার মোশতাকের এক নাতনি ওই ৬ জনকে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। কারাগারে বন্দি থাকা ওই ছয়জন ব্যক্তি হলেন- জেলার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাড়া গ্রামের খন্দকার আবুল খায়ের, নিজাম উদ্দিন, খোকা মিয়া, আবদুল ওহাব পাঠান, জালাল খন্দকার ও জাহাঙ্গীর আলম।

সংবাদ সম্মেলনে এই ছয়জনের মধ্যে নিজাম উদ্দিনের মেয়ে এবং বাকি ৫ জনের স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ওই ৬ জনকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলে দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খন্দকার আবুল খায়েরের স্ত্রী জোবায়দা আক্তার। এতে তিনি বলেন, গত ১৮ নভেম্বর দশপাড়া গ্রামে খুনি মোশতাকের ভাতিজা নাসিরুল কবির ও যুবলীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান বাবুলের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওহাব পাঠান ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলা করার জের ধরে খুনি মোশতাকের নাতনি (নাসিরুল কবিরের ভাগ্নি) কাজী রেহা কবির ওই ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি সাজানো লুটপাটের মামলা দায়ের করেন থানায়। পরে ওই মামলায় গত ১ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গেলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ওই ৬ জনকে জেলহাজতে পাঠান। এ ঘটনার ২ দিন পর গত ৩ ডিসেম্বর নাসিরুল কবিরের বাহিনীর আরেক সদস্য তাজুল ইসলাম মীরকে দিয়ে ওই ছয়জনসহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি সাজানো দোকান চুরির মামলা করানো হয়েছে কুমিল্লার আদালতে।

জোবায়দা আক্তার আরও বলেন, খুনি মোশতাকের নাতনি কাজী রেহা কবির মামলায় বলেছেন আসামিরা বঙ্গবন্ধুর খুনি মোশতাক ও তার পরিবারের দোসর। আমরা বলতে চাই, আমাদের বাড়ি দশপাড়া গ্রামে, আমরা এই সমাজের বাসিন্দা। দশপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হওয়া ও আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া কি আমাদের অপরাধ। খুনি মোশতাকের পরিবারের সঙ্গে আমাদের কোন সর্ম্পক নেই। বরং রেহা কবির খুনি মোশতাকের আপন ভাতিজির ঘরের নাতনি। তিনি প্রতি সপ্তাহে এসে নামধারী যুবলীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান বাবুলসহ খুনি মোশতাকের মাজার জিয়ারত করেন। তিনি নিজেই খুনি মোশতাকের দোসর। আমরা তার এবং তাজুলের ওই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। পাশাপাশি কারাগারে বন্দি থাকা আমার স্বামীসহ ৬ জনের মুক্তির দাবি করছি।

জোবায়দা আক্তার বলেন, কাজী রেহা কবির অনেক চালাক প্রকৃতির নারী। তিনি সাজানো মামলাটির বিশ্বাসযোগ্যতা সৃষ্টি করতে মামলার প্রথম আসামি করেছেন দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা খুনি মোশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াককে। তিনি ভেবেছেন খুনি মোশতাকের ছেলেকে আসামি করলে আমাদের বিপদে ফেলতে পারবেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে একটি মামলার বাদী তাজুল ইসলাম মীর বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে মোট দু’টি মামলা করেছে। এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার (পাল্টা) মামলা করেছি।

এদিকে, এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত কাজী রেহা কবিরের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি রোজা রেখেছি। ইফতার করে আপনাকে কল দিচ্ছি। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

Check Also

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করেননি সমাজী

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।