বাবুনগরী মামুনুল ও ফয়জুলের বিরুদ্ধে এবার মানহানি মামলার আবেদন

ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার দায়েরের দুদিন পর হেফাজত আমির জুনাইদ বাবুনগরী, খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে এবার মানহানির মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ মামলার আবেদন করেছেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। এ আবেদনে ভাস্কর্যবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধেও মানহানি মামলা নেয়ার আবেদন করা হয়েছে।

আদালত এ–সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি। মানহানি মামলার আবেদনের বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন বাদী নিজেই।

এবি সিদ্দিকী বলেন, আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

মামলার আরজিতে বাদী এবি সিদ্দিকী দাবি করেন, গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় আসামি মামুনুল হক ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আর জুনাইদ বাবুনগরী গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক সভায় ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আসামি ফয়জুল করীম বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের এক জনসভায় ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। ভাস্কর্য তৈরি করা হলে তা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন আসামি ফয়জুল করীম।

এর আগে খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়প্রতিপন্ন করছে।

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই জঙ্গিবাদীদের সঙ্গে ঐক্যজোট করে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য তার ছেলে তারেক রহমানকে দিয়ে জঙ্গিবাদীদের দিয়ে গ্রেনেট হামলা করে আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মীকে হত্যা করে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০১৪ সালে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে ভয়াবহ পেট্রলবোমা মেরে হাজার হাজার নিরীহ জনগণকে হত্যা করা হয়। এ অবস্থায় আবার এই স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানিদের দালালচক্র খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী জাতির পিতার ভাস্কর্য বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সংঘাত সৃষ্টি করে। তাদের গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়াতে জাতির পিতার ভাস্কর্যের একটি হাত ভেঙে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের মধুর ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে দেয়।

তাই বাদী মনে করেন, যে পিতার নেতৃত্বে এই দেশের জন্ম হয়েছে। একটি স্বাধীন বাংলাদেশ সেই পিতার হাত ভেঙে এই বিএনপি-জামাত-হেফাজত, ইসলামী শাসনতন্ত্র– এই সংগঠনগুলো স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করে পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা করে এবং স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতার নাম এই দেশের মাটি থেকে মুছে ফেলতে চায়।

এর আগে জাতির জনকের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেয়ায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে বাবুনগরী, মামুনুল ও ফয়জুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। মামলা দুটি আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালত এ আদেশ দেন।

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।