মাহতাব উদ্দিন এম.এ
আগামী ২০২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঠ্যপুস্তকে আসছে আমূল পরিবর্তন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এ ব্যাপারে আটঘাট বেঁধেই নিবিড়ভাবে পরিমার্জনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। নবম-দশম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী ১০টি বিষয় পড়ানো হবে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞান এ পাঁচটি বিষয়ের উপর এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্য পাঁচটি বিষয় হলো, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ভালো থাকা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। এনসিটিবির সুপারিশ মতো এগুলো শুধুমাত্র ক্লাসে পড়ানো হবে এবং ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে, নেয়া হবে না কোনো পরীক্ষা। থাকবে না কোনো বিভাগ। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না রেখে পাঠ্যপুস্তকে আনা হয়েছে অনুরূপ পরিবর্তন। পরীক্ষার পরিবর্তে প্রাথমিকেও রাখা হয়েছে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা।
এসএসসি পরীক্ষা থেকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাদ পড়ায় জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন সেকুলার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ উক্ত বিষয় বাদ রেখে কার্যত ধর্মীয় বিষয়ের প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছে। এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ অভিযোগ মানতে নারাজ। তারা ধর্মীয় শিক্ষাকে আরো যুগোপযোগী করার কথা বলছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে স্কুল-মাদরাসাগুলো বিগত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল।
কিন্তু সম্প্রতি কওমী মাদরাসাগুলো খুলে দিয়ে পক্ষান্তরে স্কুলসমূহ বন্ধ রাখায় শত শত স্কুল-পড়ুয়া শিক্ষার্থী মাদরাসায় ভর্তি হয়ে গেছে। অভিভাবকগণ সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে মাদরাসাকেই আপাতত বেছে নিয়েছেন। মাদরাসাগুলোতে আরবির পাশাপাশি সীমিত আকারে (আমার জানামতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) বাংলা, ইংরেজি, গণিত ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হয়। এ কারণে অনেক অভিভাবকের মাদরাসাগুলোর প্রতি আগে থেকেই একটা দুর্বলতা ছিল। স্কুলসমূহ বন্ধ রেখে মাদরাসা খোলার ঘটনায় মাদরাসার প্রতি ওইসব অভিভাবকদের আকর্ষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার ছোবলে অভিভাবকদের পকেটের অবস্থাও ভালো যাচ্ছে না। এদিকে দেশে কিশোর অপরাধের মাত্রাও গেছে বেড়ে। সন্তানের মনে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করার জন্য অভিভাবক-সমাজ মরিয়া। কম খরচে এবং এক প্যাকেজে প্রচলিত বিষয়ের সাথে ধর্মীয় বিষয়ের সমন্বিত কারিকুলামকে তারা চমৎকার ভাবছেন। লুফে নিচ্ছেন উক্ত প্যাকেজ। হাজার হাজার কওমী শিক্ষার্থী লেখাপড়া শেষ করে চাকরির সুযোগ না পেয়ে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করছেন। বাড়ছে মাদরাসা, কমছে স্কুল-শিক্ষার্থী। ষষ্ঠ-নবম শ্রেণি পর্যন্ত এসাইনমেন্ট এবং প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ-পরিকল্পনা বিতরণ করতে গিয়ে অনেক স্কুল-শিক্ষার্থীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। করোনাকালে অনেক স্কুল-শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে এনসিটিবি তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত হবে স্কুলগুলোতেই বরং আরবি শিক্ষার গুরুত্ব বৃদ্ধি করে এবং এসএসসিতে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে ছাত্র-অভিভাবকদের স্কুলমুখী করা
Check Also
আশাশুনিতে কর্মী সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে জামায়াত নেতার কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তা
স্টাফ রিপোর্টার:আশাশুনিতে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব কার্যালয় আলামিন …