তোফাজ্জল হোসাইন কামাল : রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ অনেকটাই এগিয়ে এনেছে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি। এরইমধ্যে কমিটির কাছে সমীক্ষা রিপোর্টও পেশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বিদ্যমান ২৯১টি রুটের পরিবর্তে ৪২টি রুটে ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে ৬ রঙের গণপরিবহন পরিচালনায় যাবতীয় ব্যবস্থাপনার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া নগরীতে চলাচলরত আড়াই হাজার কোম্পানির প্রায় ৩০ হাজার পরিবহনের পরিবর্তে ৯ হাজার ২৭টি গণপরিবহন পরিচালনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। ১৪ তম এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সভা শেষ সাংবাদিকদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা আজ আমাদের কমিটির ১৪ তম সভা করেছি। সভায় বেশ কিছু বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত সভার আলোকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাস রুট রেশনালাইজেশনে ৯টি ক্লাস্টারে ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে ৪২টি রুটে গণপরিবহন পরিচালনা করা হবে।’
জানা গেছে , ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে বাস রুট রেশনালাইজেশন ও কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনা পদ্ধতি প্রবর্তনের বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাস রুট রেশনালাইজেশন করার জন্য ১০ সদস্যের একটি কমিটি করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তৎকালীন দক্ষিণ সিটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এরপর কমিটি বাস্তবতা সমীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পরামর্শক নিয়োগ করে। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে সমীক্ষা করে কমিটি গত ১০ নভেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়।
২২টি কোম্পানি
সুপারিশে বলা হয়, এখনকার আড়াই হাজার কোম্পানির পরিবর্তে ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে ৯ হাজার ২৭টি বাস পরিচালিত হবে। এরমধ্যে ছয় হাজার ৪৫৭টি বাস ও দুই হাজার ২৭০টি মিনিবাস থাকবে। ৩ হাজার ৭৬১টি সম্পূর্ণ নতুন বাস রাখা হবে। এসব কোম্পানিতে গণপরিবহন মালিকরা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে থাকবেন। সঠিকভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিটি কোম্পানিতে ৫০০টির কম গণপরিবহন রাখা হবে। কোম্পানিগুলোকে আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের জন্য কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। ৫ বছরের বেশি পুরনো বাস রাখা হবে না।
৪২টি রুটে ৬ রঙের বাস : এখন ঢাকায় ২৯১টি রুটে গণপরিবহন চলছে। নানা রঙের পরিবহনের মধ্যে গণপরিবহন বেছে নেওয়া কঠিন। সড়কে বিশৃঙ্খলার এটাও একটা কারণ। এর ফলে যানজটসহ কোম্পানিগুলোর মধ্যে যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় নির্দিষ্ট ৬টি রঙের গণপরিবহন পরিচালনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবে রুটগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে,আরবান, সাব-আরবান ও ঢাকা চাকা ক্লাস্টার। কোন ক্লাস্টার কোন অঞ্চলে ও কোন রঙের বাস কোন কোন রুটে চলবে সেই তালিকা এই প্রতিবেদনের শেষাংশে যুক্ত করা হয়েছে।
জেলার বাস ঢাকায় ঢুকবে না: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস রুট রেশনালাইজেশনের জন্য জেলা পর্যায়ের কোনও বাস রাজধানীতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এজন্য রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে পর্যাপ্ত টার্মিনাল ও নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
কী হবে বিদ্যমান বাসের : ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে নগরীতে নিবন্ধিত বাসের সংখ্যা ৩০ হাজার ২৭৪টি। এখন তা আরও বেড়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যমান বাসগুলোর মূল্যায়নের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোতে মালিকানার ভাগ নির্ধারণ করা হবে। এসব বাস ও মিনিবাস স্ক্র্যাপ করা হলে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে। এ ছাড়া নতুন বাস সংগ্রহের জন্য ৪-৫ শতাংশ সুদে ঋত দেওয়া হবে।
টিকিটিং: স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে বাসগুলোতে টিকিটিং সিস্টেম করা হবে। পাশাপাশি ভাড়া নীতিও প্রণয়ন করা হবে। এতে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায়ের সিস্টেম থাকবে না। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বা যাত্রীদের সঙ্গে হেলপারদের বাকবিতণ্ডার অবকাশ থাকবে না।
ঢাকার বাইরে ১০ টার্মিনাল : রাজধানীর ৩টি টার্মিনালে দেড় হাজার বাসের ধারণক্ষমতা থাকলেও তাতে প্রতিদিন ৯ হাজার ২৯৮টি বাস রাখা হয়। বাকি বাসগুলো নগরীর বিভিন্ন সড়কেই পার্কিং করা হয়। যানজটের এটাও একটা বড় কারণ। এ অবস্থায় নতুন করে ১০টি টার্মিনালের প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কেরানীগঞ্জের বাঘৈর (৩৩.৬৩ একর), হেমায়েতপুর (৩৬.৫০ একর), উত্তরার ভিরুলিয়া (১৪.৫৩ একর), গাজীপুর (১১.৭০ একর), নবীনগর-চন্দ্রা রোডের বাইপাইল (৪০.৪০ একর), কাঞ্চন এলাকা (২৪.২৪ একর), কাঁচপুর উত্তর (১৫.৪৬ একর), কাঁচপুর দক্ষিণ মদন (২৭.৭১ একর), আটিবাজারের ভাওয়াল (২৫.৭৮ একর) এবং ভুলতা (২৪.২২ একর)।
কোন রঙের বাস কোন রুটে
আরবান ক্লাস্টার (গোলাপি): এ রঙের ৮৮৩টি বাস পরিবহনগুলো ১ থেকে ৪নং রুটে চলাচল করবে। বর্তমানের ২৯১টি রুটের মধ্যে ২৩টি রুটকে ভেঙে এই চারটি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে, রুট নং ১: আব্দুল্লাহপুর-কুড়িল-মহাখালী-নাবিস্কো-মগবাজার-কাকরাইল-সায়েদাবাদ/সদরঘাট। রুট নং ২: আব্দুল্লাহপুর-কুড়িল-মহাখালী-ফার্মগেট-শাহবাগ-পল্টন-সায়েদাবাদ/কেরানীগঞ্জ জেলখানা/ঝিলমিল। রুট নং ৩: আব্দুল্লাহপুর-কুড়িল-বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগ-রেলগেট-মৌচাক-কাকরাইল-গোলাপশাহ মাজার-সদরঘাট/ঝিলমিল। রুট নং ৪: আব্দুল্লাহপুর-বেড়িবাঁধ, মাজার রোড-গাবতলী-শিকদার মেডিক্যাল-কামরাঙ্গীরচর-বাবু বাজার।
নীল : নীল রঙের এক হাজার ৪৩৩টি বাস ৫ থেকে ৮নং রুটে চলাচল করবে। পুরানো ২১টি রুট ভেঙে এই চারটি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে- রুট নং ৫: আবদুল্লাহপুর-কুড়িল-নতুনবাজার-বাড্ডা-মৌচাক-কাকরাইল-মৎস্য ভবন-শাহবাগ-সায়েন্স ল্যাব-আজিমপুর। রুট নং ৬: আবদুল্লাহপুর-কুড়িল-মহাখালী-বিজয় সরণি-মানিক মিয়া এভিনিউ-সোবহানবাগ-সায়েন্স ল্যাব-আজিমপুর। রুট নং ৭: আবদুল্লাহপুর-কুড়িল-ফ্লাইওভার-ইসিবি চত্বর-কালশি-মিরপুর ১০-মিরপুর ১-টেকনিক্যাল-গাবতলী-হেমায়েতপুর। রুট নং ৮: হেমায়েতপুর-গাবতলী-শ্যামলী-শিশু মেলা-আগারগাঁও-বিজয় সরিণ-মহাখালী-বনানী-শেওড়াপাড়া-কুড়িল-আবদুল্লাহপুর।
মেরুন : এ রঙের এক হাজার ১০৮টি বাস ৯ থেকে ১৩নং রুটে চলবে। পুরনো ৩৫টি রুট ভেঙে এই ৫টি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে- রুট নং ৯: হেমায়েতপুর-গাবতলী-ফার্মগেট-বাংলামোটর-মগবাজার-মৌচাক-খিলগাঁও ফ্লাইওভার/মতিঝিল-সায়েদাবাদ/সাইনবোর্ড।রুট নং ১০ : হেমায়েতপুর-গাবতলী-ফার্মগেট-শাহবাগ-গুলিস্তান/মতিঝিল/সায়েদাবাদ-সাইনবোর্ড/ধলেশ্বর/কাঁচপুর।রুট নং ১১ : হেমায়েতপুর-গাবতলী-মতিঝিল/ফুলবাড়িয়া/কাঁচপুর/নারায়ণগঞ্জ। রুট নং ১২: হেমায়েতপুর-গাবতলী-শ্যামলী-আসাদগেট-কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-গুলিস্তান-মতিঝিল-সদরঘাট। রুট নং ১৩: হেমায়েতপুর-গাবতলী-টেকনিক্যাল-শ্যামলী-আগারগাঁও-বিজয় সরণি-মহাখালী-গুলশান ১-বাড্ডা-রামপুরা-স্টাফ কোয়ার্টার।
কমলা : এ রঙের এক হাজার ১২২টি বাস ১৪ থেকে ২০নং রুটে চলবে। পুরনো ৪৭টি রুট ভেঙে সাতটি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে-রুট নং ১৪: মিরপুর চিড়িয়াখানা-মিরপুর ১-টেকনিক্যাল-শ্যামলী-আসাদগেট-সায়েন্স ল্যাব-নিউমার্কেট-আজিমপুর-ফুলবাড়িয়া-তাঁতিবাজার-বাবুবাজার-কেরানীগঞ্জ-বান্দুরা। রুট নং ১৫: মিরপুর ১২-মিরপুর ১০-শেওড়াপাড়া-আগারগাঁও-ফার্মগেট-শাহবাগ-পল্টন-গোলাপশাহ মাজার-তাঁতিবাজার-রায়সাহেব বাজার-সদরঘাট। রুট নং ১৬: মিরপুর-১৪, মিরপুর-১০-শেওড়াপাড়া-খামারবাড়ি-ফার্মগেট-বাংলামোটর-মগবাজার-মৌচাক-কমলাপুর-শাপলাচত্বর-দয়াগঞ্জ-পোস্তগোলা। রুট নং ১৭: গাবতলী/মিরপুর-১-কালশী-জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার-কুড়িল ফ্লাইওভার-নতুনবাজার/বেরাইদ-বাড্ডা-রামপুরা ব্রিজ-বনশ্রী-স্টাফ কোয়ার্টার। রুট নং ১৮: মিরপুর-১২, ১০-শেওড়াপাড়া-ফার্মগেট-বাংলামোটর-শাহবাগ-পল্টন-গুলিস্তান-শাপলাচত্বর-কমলাপুর-টিটিপাড়া-বাসাবো-খিলগাঁও তালতলা। রুট নং ১৯: মিরপুর চিড়িয়াখানা-মিরপুর-১-টেকনিক্যাল-শ্যামলী-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-পল্টন-গুলিস্তান-শাপলা চত্বর-কমলাপুর-টিটিপাড়া-খিলগাঁও-তালতলা। রুট নং ২০: মিরপুর-১২/ ইসিবি চত্বর-মিরপুর-১০-কাজিপাড়া-শেওড়াপাড়া-আগারগাঁও-মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-সোবহানবাগ-সায়েন্স ল্যাব-নিউমার্কেট-আজিমপুর
সবুজ : এ রঙের এক হাজার ৪৩৩টি বাস ২১ থেকে ২৮নং রুটে চলবে। পুরনো ৫৪টি রুট ভেঙে এই ৮টি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে-রুট নং ২১: বসিলা-ট্রাক স্ট্যান্ড-শঙ্কর-জিগাতলা-সায়েন্স ল্যাব-মৎস্যভবন-কাকরাইল-শাপলা চত্বর-হানিফ ফ্লাইওভার-সাইনবোর্ড-নারায়ণগঞ্জ। রুট নং ২২: ঘাটারচর-বসিলা-ট্রাকস্ট্যান্ড-আসাদগেট-ফার্মগেট-শাহবাগ-পল্টন-গুলিস্তান-মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার-মৃধাবাড়ি-ব্রিজ-রূপশী-বুলতা। রুট নং ২৩: ঘাটারচর-বসিলা-ট্রাকস্ট্যান্ড-আসাদগেট-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-পল্টন শাপলা চত্বর-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-সাইনবোর্ড-চট্টগ্রাম রোড-মেঘনা ঘাট। রুটন নং ২৪: ঘাটারচর-বসিলা-ট্রাকস্ট্যান্ড-জাপান গার্ডেন সিটি-শ্যামলী-শিশুমেলা-আগারগাঁও-কাজিপাড়া-কালশি-জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার-আবদুল্লাহপুর। রুট নং ২৫: ঘাটারচর-বসিলা-ট্রাকস্ট্যান্ড-টাউন হল-আসাদগেট-মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-বিজয় সরণি-মহাখালী-কাকলী-কুড়িল-আবদুল্লাহপুর। রুট নং ২৬: ঘাটারচর-বসিলা-ট্রাকস্ট্যান্ড-টাউন হল-আসাদগেট-কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-কাকরাইল-শাপলা চত্বর-দয়াগঞ্জ-পোস্তাগোলা-নারায়ণগঞ্জ। রুট নং ২৭: ঘাটারচর-শিয়া মসজিদ-শ্যামলী-আগারগাঁও-বিজয় সরণি-মহাখালী-গুলশান-১-রামপুরা ব্রিজ-বনশ্রী-স্টাফ কোয়ার্টার। রুট নং ২৮: ঘাটারচর-মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড-জিগাতলা-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-মৎস্য ভবন-কাকরাইল-মৌচাক-খিলগাঁও-তালতলা/স্টাফ কোয়ার্টার।
বেগুনী : এ রঙের এক হাজার ৮৯টি বাস ২৯ থেকে ৩৪নং রুটে চলবে। পুরনো ৩৩টি রুট ভেঙে এই ছয়টি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে-রুট নং ২৯: কাঁচপুর -যাত্রাবাড়ী-বাসাবো-মালিবাগ-নতুনবাজার-কুড়িল-বিমানবন্দর-আবদুল্লাহপুর। রুট নং ৩০: ডেমরা-কোনাপাড়া-মৃধাবাড়ি-সায়েদাবাদ-মতিঝিল-ফকিরাপুল-মগবাজার-সাত রাস্তা-মহাখালী-বনানী-শেওড়া-আবদুল্লাহপুর। রুট নং ৩১: কাঁচপুর-যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান-পল্টন-শাহবাগ-ফার্মগেট-শেওড়াপাড়া-মিরপুর ১০-ভাসানটেক। রুট নং ৩২: ডেমরা ঘাট-কোনাপাড়া -মৃধ্যাবাড়ি-সায়েদাবাদ-জয়কালী মন্দির-ইত্তেফাক-শাপলা চত্বর-শাহবাগ-ফার্মগেট -আসাদগেট-শ্যামলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর ১-মিরপুর চিড়িয়াখানা। রুট নং ৩৩: নারায়ণগঞ্জ/জুরাইন-যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান-পল্টন-কাকরাইল-মগবাজার-সাত রাস্তা-মহাখালী-কাকলি-জিল্লুর ফ্লাইওভার-কালশী-মিরপুর-১০, মিরপুর-১-মিরপুর দিয়াবাড়ি। রুট নং ৩৪: সাইনবোর্ড-যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান-পল্টন-শাহবাগ-সায়েন্স ল্যাব-আসাদগেট-শ্যামলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর-১-মিরপুর-১০-মিরপুর -১২।
সাব আরবান ক্লাস্টার : নর্থ- এই অংশের এক হাজার ৮৯টি বাস ৩৫-৩৭ নং রুটে চলবে। পুরনো ৪০টি রুট ভেঙে এই তিনটি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে-রুট নং ৩৫: শ্রীপুর/কাপাসিয়া/গাজীপুর/মৌচাক/কোনাবাড়ি/গাজীপুর চৌরাস্তা/আব্দুল্লাহপুর। রুট নং ৩৬: গোড়াশাল/কালীগঞ্জ/মীরের বাজার/আব্দুল্লাহপুর/ রুট নং ৩৭: কালিয়াকৈর/ চন্দ্রা/আশুলিয়া/দোহার/আব্দুল্লাহপুর।
নর্থ-ওয়েস্ট : এই অংশে ৯৯২টি বাস ৩৮ থেকে ৪০ নং রুটে চলাচল করবে। পুরনো ৩০টি রুট ভেঙে এই তিনটি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে-রুট নং ৩৮: নন্দনপার্ক-ইপিজেড-বাইপাইল-ফ্যান্টাসি কিংডম-আশুলিয়া-দোহার-বেড়িবাঁধ-মাজার রোড-মিরপুর। রুট নং ৩৯: চন্দ্রা-নন্দন পার্ক-ইপিজেড-বাইপাইল-নবীনগর-সাভার-হেমায়েতপুর। রুট নং ৪০: পাটুরিয়া-মানিকগঞ্জ-কালামপুর-ধামরাই-নবীনগর-সাভার-হেমায়েতপুর।
সাউথ : এই পরিবহনটি ৪১ ও ৪২নং রুটে চলবে। এতে পরিবহনের সংখ্যা থাকবে ৯৯টি। পুরনো ৫টি রুট ভেঙে এই দুটি রুট করা হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে-রুট নং ৪১: ঝিলমিল-রুহিতপুর-নবাবগঞ্জ-দোহার-বান্দুরা-হরিরামপুর। রুট নং ৪২: হরিরামপুর-শ্রীনগর-মাওয়া- লৌহজং।
ঢাকা চাকা ক্লাস্টার : এতে ৫২টি বাস চলবে। রুট হবে নতুন বাজার-পুলিশ প্লাজা। এই বাসগুলো এখন এই রুটেই চলছে।
৩১ মার্চের মধ্যে ঘাটারচর-মতিঝিল রুটে বাস
আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন এ সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) কমিটির ১৪ তম সভা শেষ সাংবাদিকদের তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাবনা এসেছে সেগুলো আমরা চূড়ান্ত করেছি। সেই চূড়ান্তকরণের আলোকেই আমরা প্রাথমিকভাবে একটি রুটের আংশিক, ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এই অংশে আমরা পাইলটিং হিসেবে এই প্রকল্পটি প্রবর্তন করতে যাচ্ছি। আমরা আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের একটি রুটের আংশিক অংশে এই কার্যক্রম শুরু করার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যারা অংশীজন রয়েছেন তাদের সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। আমি আশাবাদী এই সময়সীমার মধ্যে এই কার্যক্রমগুলো আমরা সম্পন্ন করতে পারব। আমার বিশ্বাস এর মাধ্যমে ঘাটারচর-মতিঝিল অংশে এই কার্যক্রমের শুভ সূচনা হবে। যার ফলশ্রুতিতে পর্যায়ক্রমে অন্য রুটগুলোতেও আমাদের কার্যক্রম শুরু হবে।’
মেয়র বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, অচিরেই গণপরিবহনে সুশৃঙ্খল পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ঢাকাবাসীকে এর সুফল দিতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নগরীতে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশের মাধ্যমে গণপরিবহন চলতো। আমরা আজ কমিটির সদস্যরা এর বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখানে কার কী দায়িত্ব সবগুলো নির্ধারণ করেছি। বাসগুলো কীভাবে পরিচালনা করতে হবে, হেলপারদের ড্রেস কেমন হবে সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত কঠিন কাজ। সবার সহযোগিতা পেলে এ কাজটি চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করা যাবে।’
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …