যশোরে স্কুল নির্মাণকাজে নিম্নমানের সরঞ্জাম, ত্রুটিপূর্ণ অংশ ভেঙে দিলো গ্রামবাসী

যশোর প্রতিনিধি:   জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে যশোরের বেনাপোলের ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত চারতলা ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধসহ ভবনটির কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) সকালে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিরাপত্তার কথা ভেবে ভবনের অনেকাংশ ভেঙে গুড়িয়ে দেয় গ্রামবাসী।

বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের এসআই রিয়েল এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহলদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ পায় যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এন আই ট্রেডার্স’।

গত বছরের ৩ জুলাই ভবনের নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথম থেকেই বেজমেন্ট, ঢালাই কাজে অনিয়ম দেখা দিলে শিক্ষক ও এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আর অনিয়ম করবে না আশ্বস্ত করে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করে। রোববার আবারো নির্মাণ কাজে অনিয়ম ধরা পড়লে বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, ভবনটির ভিত এতো নিচু যে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে ক্লাসের মধ্যে ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। রেলিং-এ যে পরিমাণ রড দেয়ার কথা ছিল তা না দেয়ায় যেকোনো সময় রেলিং ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া রড, সিমেন্টে ফাঁকি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এতে ভবনটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না, শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। টেকসই নিরাপদ ভবন চান তারা।

নবনির্মিত চারতলা ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধসহ ভবনটির কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে । ছবি : সংগৃহীত

ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুভাস চন্দ্র মন্ডল বলেন, বারবার সতর্ক করা হলেও ঠিকাদারের লোকজন অনিয়ম করে ভবনের কাজ চালিয়ে গেছে। আমরা সঠিক নিয়মে কাজ চাই। শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে রাখতে চাই না।

বিদ্যালয়ের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মিনহাজুর ইসলাম মিন্টু জানান, নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত রড ও অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার না হওয়ায় আমি নিজেই কাজ বন্ধ রাখি এবং ছয়টি পিলার ভেঙে ফেলি।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এন আই ট্রেডার্সের প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম বলেন, নির্মাণ কাজে তেমন কোনো অনিয়ম হয়নি। ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শে কাজ হয়েছে। তবে নির্মাণ শ্রমিকরা স্কুলের বারান্দার কাজ করার সময় এক জায়গায় রড কম ব্যবহার করেছে বলে জানতে পেরেছি। অভিযোগ পাওয়ার পর তা ঠিক করা হবে জানালেও স্কুলের লোকজন ভাঙচুর করেছে।

প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার জহির রায়হান জানান, নির্মিত ভবনের কয়েকটি অংশ ভেঙে ফেলার কথা তিনি জানেন। নিয়োজিত ঠিকাদার কামাল আহমেদকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শার্শা উপজেলার শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, নির্মাণাধীন স্কুল ভবন ভাঙচুরের বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে সেরকম কিছু ঘটলে তদন্ত করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।