নারায়ণগঞ্জের বন্দরে শিশু আরাফাতকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যার পর পুকুরে লাশ ফেলে দিয়ে রিপন পরিবারের সঙ্গে খুঁজতে বের হয়। এমনকি আরাফাতের সন্ধান পেতে দুই দিন বিভিন্ন স্থানে নিখোঁজ সংবাদের মাইকিংও করে সে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বুধবার মামলাটি ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করেন।
এদিকে মামলার প্রধান আসামি রিপন আদালতে আত্মসমর্পণের পর বুধবার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা ফেরদৌস ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিল্টন মিয়ার আদালতে আত্মসমর্পণ করে রিপন। এরপর ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিরাজদৌল্লাহ। আসামি ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে রিপনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এসআই সিরাজদৌল্লাহ জানান, মামলা হওয়ার ৩ দিন পর রিপন নারায়ণগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে। বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা ফেরদৌসের আদালতে শুনানি শেষে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার শিশু আরাফাত হত্যা মামলাটি নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর অতুলকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেন।
এলাকাবাসী জানান, বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউপির সাবেক সদস্য লাউসার গ্রামের রফিকুল ইসলাম মনার ছেলে স্কুলছাত্র আরাফাতকে (১১) গত ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বিজয় দিবসের কনসার্টে নিয়ে যায় একই গ্রামের ইসলাম মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া। ওই রাতেই বাড়ির পাশে পুরাতন স্কুলভবনে নিয়ে আরাফাতকে প্রথমে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয়।
পরে গলাটিপে হত্যা করে লাশ পুকুরে লাশ ফেলে দিয়ে রিপন পরিবারের সঙ্গে আরাফাতকে খুঁজতে বের হয়। আরাফাতের সন্ধান পেতে দুই দিন বিভিন্ন স্থানে নিখোঁজ সংবাদের মাইকিং করে রিপন। এদিকে পুকুরে ফেলে দেয়ার ৩ দিন পর শুক্রবার আরাফাতের লাশ ভেসে ওঠে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। আরাফাতের জানাজায়ও অংশ নেয় রিপন।
এ সময় জানাজায় অংশ নেয়া দেড় সহস্রাধিক মানুষ বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভ দেখে জানাজা শেষে ভয়ে রিপন মিয়া ও তার পরিবার পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার পর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রিপনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহত আরাফাতের মা।