নিজস্ব প্রতিনিধি: আসছে নতুন বছরের ৩০জানুয়ারি কলারোয়া পৌরসভার ৩য় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের দৌড়ঝাপে মুখোরিত পৌরসভা এলাকা। এরই মাঝে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত। উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ইতোমধ্যে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর তথা মহিলা কাউন্সিলর পদের জন্য নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন সংগ্রহ করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে অনেক নতুন ও নবীন মুখ দেখা যাচ্ছে। নানান কারণে নির্বাচনের হিসাব-নিকাষও জটিল হচ্ছে।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত মেয়র পদে ৫জন, ৯টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৬জন ও ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৩জন প্রার্থীতার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। মেয়র পদে মনোনয়ন সংগ্রহকারী ৫জন হলেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক সাজেদুর রহমান খাঁন চৌধুরী মজনু, উপজেলা আ.লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য শেখ আমজাদ হোসেন, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র ও কয়লা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুল, উপজেলা বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পৌর মেয়র গাজী আক্তারুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার মনোরঞ্জন বিশ্বাস জানান, ‘এখন পর্যন্ত কেউ মনোনয়ন জমা দেন নি। ৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহন করা হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ২১,২৮০জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১০,২৮৪জন ও মহিলা ভোটার ১০,৯৯৬জন। রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে আছেন সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন অফিসার নাজমুল কবির।’
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, ‘তৃতীয় ধাপে দেশের ৬৪টি পৌরসভায় ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ করা হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর। যাচাই-বাছাই ৩ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১০ জানুয়ারি। ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ জানুয়ারি।’
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে কলারোয়া পৌরসভা স্থাপিত হওয়ার পর নানান জটিলতার কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সেসময় মনোনিত রাজনৈতিক ব্যক্তি পৌর চেয়ারম্যান ও পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)গণ প্রশাসক হিসেবে কলারোয়া পৌরপিতার দায়িত্ব পালন করেন। আইনি জটিলতা কেটে যাওয়ার পর ২০১১ সালে প্রথম ও ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বারের মতো পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় থাকা কলারোয়া পৌরসভার পরপর দুই নির্বাচনে মেয়র পদে জয়ী হন বর্তমানে বরখাস্ত মেয়র গাজী আক্তারুল ইসলাম। উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি থাকাকালে বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ২০১১ সালে কলারোয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র ও উপজেলা বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে থেকে দলীয় প্রতীক ধানেরশীষ নিয়ে ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন তিনি। আর আগামি ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি ৩য় নির্বাচনে আবারো প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তার এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনেকটা অনিশ্চিত। কেননা কলারোয়ায় সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহর হামলা মামলার রায় অল্প কিছুদিনের হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এবং সেই মামলার আসামি হওয়ায় গাজী আক্তারুল ইসলাম নিজের প্রার্থীতা নিয়েও শংকিত। সেই শংকা থেকেই তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানাও মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বলে জানান গাজী আক্তারুল ইসলাম।
এদিকে, পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ শরীফুজ্জামান তুহিনও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে যাচ্ছেন বলে বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে।