অভয়নগরের সংগ্রামী নারী ফেরিওয়ালা শেফালী বেগম সহায়তা চান

বিলাল মাহিনী (অভয়নগর, যশোর)‘কলা লাগবে কলা, লাগবে পাকা কলা, আছে কম দামের কলা, হালি মাত্র আট টাকা, লাগবে পাকা কলা। লাগবে ভালো কলা।’
মাথায় পাকা কলার ঝুড়ি, কোলে নাতিকে নিয়ে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় অভয়নগরের নওয়াপাড়া শহরের অলিগলিতে হাঁক ছাড়েন শেফালী বেগম (৪৪) নামের জীর্ণশীর্ণ শরীরের এক মহিলা। চারজনের সংসারের হাল ধরা এই নারী ভিক্ষাবৃত্তি নয়, সংগ্রাম করেই জীবন চালাতে চান।
শনিবার বিকালে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া শহরের ক্লিনিকপাড়ায় দেখা হয় এই প্রতিনিধির সঙ্গে। কথা হলে শেফালী বেগম জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার বাসিন্দা তারা। ভিটেমাটি জমিজমা কিছুই নেই তাদের। অভাবের তাড়নায় গত পাঁচ বছর পূর্বে নওয়াপাড়া শহরের বৌবাজার এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে চলেছেন তারা।
তিনি জানান, সংসারে রয়েছে তার অসুস্থ স্বামী জুলহাস মিয়া (৫০), তালাকপ্রাপ্তা কন্যা ফরিদা বেগম (২৫) আর নাতি ফাইম আলী (৩)। চারজনের সংসারের ঘানি টানতে মাথায় তুলে নিয়েছেন পাকা কলার ঝুড়ি।
বাজার থেকে কাঁচা কলা কিনে বাড়িতে রেখে তা পাকিয়ে ঝুড়িতে সাঁজিয়ে নাতিকে কোলে তুলে শেফালী বেগম সকালে বের হন কলা বিক্রি করতে। দুপুরের খাবার শেষে বিকালেও বের হন কলা বিক্রি করতে। সন্ধ্যা পর্যন্ত বেচাকেনা শেষে চাল, ডাল, আটা, তরিতরকারি কিনে বাসায় ফেরেন কলার ফেরিওয়ালা শেফালী বেগম।
তিনি কাঁদতে কাঁদতে জানান, কলা বিক্রি করে ঘরভাড়া দিয়ে কোনোরকমে সংসার চালানো গেলেও অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা, নাতির লেখাপড়া আর তালাকপ্রাপ্তা কন্যাকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছেন তিনি।
এদিকে ভিক্ষাবৃত্তি না করে, নারী হয়েও তিনি এত কষ্ট করে দ্বারে দ্বারে ঘুরে কলা বিক্রি করে চলেছেন, এজন্য স্কুলশিক্ষক ফারুক মাস্টারসহ শিক্ষক ও সুশীল সমাজ কলার ফেরিওয়ালাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
কলার ফেরিওয়ালা শেফালী বেগম স্বামীর চিকিৎসা ও নাতির লেখাপড়ার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য কামনা করেছেন।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।