চালকল মালিকরা (মিলার) নানা কারসাজি করে বাজারে চালের দাম বাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক।
রোববার সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিএআরআই) গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনে ভূমি উন্নয়ন ও পূর্ত কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, চাল উৎপাদনে ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে- আমরা ৫-৬ লাখ টন চাল বিদেশ থেকে আমদানি করব। সরকারি গুদামেও চাল কমে গেছে। গত বছর প্রায় ১৩ লাখ টনের মতো খাদ্যশস্য ছিল সরকারি গুদামে। এবার সেটা কমে ৭ লাখ টনে নেমে এসেছে। এই যে ৫-৬ লাখ টনের ঘাটতি আমরা যদি না মেটাতে পারি, বাংলাদেশের মিলাররা, আড়তদাররা, জোতদাররা যারা চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারা চালের দাম বাড়ায় এবারও তারা সেই কাজ করছে। এই মৌসুমের সময় এখনও তারা ধান কিনছে। ধানের দাম ও চালের দাম দুটিই তারা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, অতটা চালের ঘাটতি আমাদের নেই। কিন্তু এ সুযোগে মিলাররা নানা কারসাজি করে চালের মূল্যবৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে।
তিনি জানান, ভরা মৌসুমে আমনের দাম একটু বেশি। সরকার চেষ্টা করছে কোনোভাবেই যাতে রিকশাওয়ালা, ভ্যানওয়ালা, নিম্নআয়ের মানুষ, কম আয়ের মানুষ তাদের যেন কোনো কষ্ট না হয়। সেটা বিবেচনায় নিয়ে সরকার ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) চালু করেছে। অব্যাহতভাবে খোলাবাজারে চাল বিক্রি করছে।
পাশাপাশি রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী এক কর্মশালায় কৃষিমন্ত্রী বলেন, অপ্রচলিত ও উচ্চমূল্য ফসলের আবাদ বাড়ানোর জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পতিত জমিগুলো কীভাবে আবাদের আওতায় আনা যায় এবং কোন ফসল কোন জায়গায় ভালো হয় তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের সৃজনশীল পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।
এদিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ‘উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়-প্রথম সংশোধিত)’ এ কর্মশালার আয়োজন করে। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো. খায়রুল আলম।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আগামী বোরো উৎপাদন বাড়াতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। চলতি বছর দুই দফা বন্যার কারণে আউশ ও আমন ফলনের কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে উৎপাদনের যে পরিসংখ্যান সরকারের হাতে আছে, তাতে চালের এত ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, আমরা চাল কিনতেও পারি নাই। কিছু ভুলভ্রান্তিও আমাদের আছে। তারপরও চালের দামটা কেন এভাবে বাড়ছে, আমার কাছে বোধগম্য নয়। এত কেন বাড়বে। এমন নয় যে, বাজারে চাল নেই। এখন বাজারে যথেষ্ট চাল আছে। দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। ১-২ টাকা বাড়াও কিন্তু অনেক বাড়ায়। ৩২-৩৩ টাকার মোটা চাল ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারণগুলো কী?