আ’লীগের তিন নেতাকে দায়ী করে স্ট্যাটাস নারী ভাইস চেয়ারম্যানের : মৃত্যুর পর লাশ দেখতে আসেননি স্বামী

ফেঞ্চুগঞ্জ সংবাদদাতা :   সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা ইয়াসমিনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার দুপুরে উপজেলার ঘিলাছড়া শাহ সৈয়দ (রহ.) মাজারসংলগ্ন ঈদগাহে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

তবে মৃত্যুর দুদিনেও স্ত্রীর লাশ দেখতে আসেননি স্বামী ইয়াসির ইয়ামিন। এ নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন। এমতাবস্থায় মৃত্যুর আগে সেলিনার দিয়ে যাওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। মারা যাওয়ার আগে তার ও মেয়ের যে কোনো পরিণতির জন্য তিনজনকে দায়ী করে স্ট্যাটাস দিয়ে যান সেলিনা।

মৃত সেলিনা ইয়াসমিন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাদে দেইলি ঘিলাছড়া গ্রামের সাবেক সেনা কর্মকর্তা মৃত তাহির আহমদের মেয়ে ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আরফান আলীর নাতনি।

এদিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সেলিনার মৃত্যুর পর পুলিশ-গোয়েন্দারা খোঁজখবর নিচ্ছেন।

ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি সাফায়েত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার পর থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনজনকে দায়ী করা হয়েছে। সব তথ্য তার মেয়ের কাছে রয়েছে বলেও ফেসবুকে লিখে গেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মানসিক অবস্থা ভালো নয় বলে তার সঙ্গে কথা বলতে দেয়া হয়নি।

পুলিশের অপর একটি সূত্রের সন্দেহ, সেলিনার দায়ী করা তিনজনের মধ্যে এক আওয়ামী লীগ নেতা, এক প্রকৌশলীসহ তিনজন হতে পারেন। বিষয়টি ধামাচাপার আড়ালে তোড়জোড় চলছে। সেলিনা ইয়াসমিনের মেয়ে সেঁজুতি মুখ খুললেই সব খোলাসা হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে মেয়ে সেঁজুতির নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন সেলিনার স্বজনরা।

শনিবার সেলিনার স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

সেলিনার চাচাতো ভাই ফয়জুল ইসলাম মুহিত যুগান্তরকে বলেন, ভাগ্নির সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি এখন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তার মানসিক অবস্থা ভালো নয়। অবস্থা একটু স্বাভাবিক হলেই আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তিনি জানান, ভাগ্নির কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টের নিরাপত্তা, সংরক্ষণের ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি।

তিনি বলেন, সেলিনার সঙ্গে স্বামীর পরিবারের বনিবনা নেই জানি; তবে ডিভোর্সের ব্যাপারটি জানা নেই। মারা যাওয়ার পর মরদেহ দেখতে না এলেও সেলিনার শাশুড়ি ফেঞ্চুগঞ্জ এসেছেন বলে জানান তিনি।

সেলিনা স্ট্রোক করার পর গত শুক্রবার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত আইডিতে সেলিনা লেখেন– ‘যদি আমার শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার কোনো ক্ষতি হয়, তার জন্য মাত্র তিনজন মানুষ দায়ী থাকবে। সব প্রমাণ আমার মেয়ের কাছে আছে।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।