আটক বা কারাভোগের আগেই মুক্তি দাবি! হাস্যকর এ ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরা শহরজুড়ে এক পোস্টারিং এর মাধ্যমে। সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেয়ালে শাটানো পোস্টারিং-এ শোভা পাচ্ছে ‘নি:শর্ত মুক্তি চাই’ শীর্ষক লেখা। অথচ যার জন্য মুক্তি চাওয়া হচ্ছে তিনি এখনো আটক বা গ্রেপ্তার কিংবা কারাভোগ করেননি, রয়েছেন রীতিমতো বাইরে তথা স্বাধীন পরিবেশে।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ‘নি:শর্ত মুক্তি চাই’ শীর্ষক পোস্টার শোভা পাচ্ছে কমপক্ষে এক সপ্তাহ বা তারও বেশিদিন আগ থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায়, এমনকি রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনেও।
জানা গেছে, জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে কলারোয়া হামলা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে সাতক্ষীরা ম্যাজিস্টেট আদালতে। শেষপর্যায়ে থাকা ওই মামলায় আবশ্যিকভাবে কারাভোগ বা সাজাপ্রাপ্ত হতে পারেন-এমনটা নিশ্চিত হয়েই আটক বা কারাগারে যাওয়ার আগেই ‘নি:শর্ত মুক্তি’ চাওয়া হচ্ছে। মুক্তি’র দাবিতে শাটানো পোস্টারিংও হরহামেশা চোখে পড়ছে। ওই মামলার প্রধান আসামি হাবিবুল ইসলাম হাবিব। রয়েছেন ৫০জন আসামি। সকলেই বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
পোস্টারের উপরের বামে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি। উপরের ডানে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি। আর মাঝ বরাবর বড় আকারে জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি, সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমানে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলামের হাবিবের ছবি। রঙিন ওই পোস্টারে লেখা রয়েছে- ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক, সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব এর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তি চাই। প্রচারে: মো. আফজাল হোসেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ছাত্রদল।’
ওই পোস্টারে দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কথা উল্লে¬খ রাখা হলেও তিনি বর্তমানে সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত আছেন। অর্থাৎ খালেদা জিয়া ও হাবিবুল ইসলাম হাবিব দু’জনের নাম উল্লেখ করা হলেও তারা দু’জনই বর্তমানে কারাগারের বাইরে। সুতরাং ‘নি:শর্ত মুক্তি চাই’ কথাটি লিখে আগেভাগে পোস্টারিং কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে ‘মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার’-দাবিটি করা যেতেই পারে বলে সাধারণ মানুষেরা বলছেন।
এ বিষয়ে বিএনপি’র একাধিক নেতা জানান- ‘মামলটির যুক্তিতর্কের পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এ মামলায় হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে মিথ্যা ও প্ররোচিতভাবে আসামি করা হয়েছে, অথচ ঘটনার দিন তিনি ছিলেন ঢাকায়। বর্তমানে বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। সবকিছু হচ্ছে সরকারের আঙ্গাবহে। সুতরাং সাবেক এমপি হাবিবসহ আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ঘোষনা দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই শংকা থেকেই পোস্টারিং করা হয়েছে।’
তারা আরও বলেন, ‘মূলত রায় ঘোষণা হওয়ার পরে যদি দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে থাকতেন তাহলে এই পোস্টার শাটানো উচিত ছিলো। তবে একই পোস্টারে বেগম খালেদা জিয়ার নাম উল্লে¬খ রাখায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের কথাটি লেখা ও আগেভাগেই পোস্টারিং করা হয়েছে।’patradoot