ক্রাইমবাতা ডেস্করিপোটঃ হেফাজত ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু মানসিক নির্যাতনে হয়েছে। তার ছেলেদের অনুসারী আলেমদের একটি অংশ এই দাবি করেছেন। তারা বলছেন, হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা, জীবনের শেষ মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করতে না দেয়াসহ বিভিন্ন মানসিক নির্যাতনে তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের ব্যানারে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আহমদ শফীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন আহমদ শফী আল মাদানী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আলেমদের অনেকেই আগে দলটির বিভিন্ন পদে ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আল্লামা শফীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করে মৃত্যুরহস্য উদঘাটন এবং জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একটি চিহ্নিত উগ্রগোষ্ঠী ছাত্র-শিক্ষকদের জিম্মি করে মাদ্রাসায় অরাজকতা সৃষ্টি করে। সেই উগ্রগোষ্ঠীর কয়েকশ’ সদস্য এখনো হাটহাজারীতে অবস্থান করছে। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণে রেখে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন মামলা করার পর থেকেই তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধমকি ও জীবননাশের ভয় দেখানো হচ্ছে।
আহমদ শফীর মৃত্যু যদি স্বাভাবিক হয়, তাহলে তো কারও আতঙ্কিত হওয়ার কথা না। কিন্তু মামলা করার পর বিশেষ মহল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।
মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটিকে ‘মামা-ভাগনের সিন্ডিকেটের অবৈধ কমিটি’ উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হাটহাজারী মাদ্রাসার দায়িত্ব ছিনিয়ে নেয়া এবং আহমদ শফীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মাসখানেক পর হেফাজতে ইসলামের নামে মামা-ভাগনে অবৈধ কাউন্সিল করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটি অবৈধ কমিটি ঘোষণা করেছে। এই কমিটি অবৈধ ও অসাংবিধানিক।
সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে আহমদ শফীর মৃত্যুরহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের শাস্তি; তার পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা; আহমদ শফীর পরিবারের সদস্য ও তার অনুসারীদের নিরাপত্তা বিধান; আহমদ শফীর রেখে যাওয়া অঙ্গনগুলো থেকে বিরোধীদের অপসারণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আহমদ শফীর আরেক ছেলে আনাস বিন আহমদ শফী (আনাস মাদানী), আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলার বাদী ও আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন, হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ প্রমুখ।