ক্রাইমবাতা রিপোট: স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকে আজ পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। গণতন্ত্র আজ একটা কাগুজে শব্দে পরিণত হয়েছে। এর কোন বাস্তব রূপ নেই। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো ধ্বংস হতে হতে আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। ফলে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তপনা জেকে বসেছে। দুর্নীতি ও চরম অবক্ষয় সমাজ দেহে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম ও নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ এবং অগণিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। যে লক্ষ্য ও আর্দশ নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে সে লক্ষ্য এখনো পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্বাধীনতার সুফল এবং রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থা্ৎ স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জে এস ডির সভাপতি আসম আবদুর রব স্থায়ী কমিটির সভায় একথা বলেন। আজ জেএসডি’র স্থায়ী কমিটির সভা আ স ম রবের সভাপতিত্বে তাঁর বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন জেএসডি স্থায়ী কমিটির সদস্য এডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, সা কা ম আনিসুর রহমান খাঁন, মোঃ সিরাজ মিয়া, তানিয়া রব, জনাব শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও এডভোকেট মাহমুদুর রহমান প্রমূখ।
সভার রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়,স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত। একটি রাষ্ট্রের জীবনে ৫০ বছর নেহাত কম নয়। ধীরগতিতে হলেও আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, অর্থনীতির আকার অনেক বড় হয়েছে,মা শিশু মৃত্যুহার কমেছে ,গড় আয়ু বেড়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে উপনিবেশিক শাসন কাঠামো অব্যাহত থাকায় সর্বক্ষেত্রে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যেই উন্নয়ন এবং নৈতিকতায় অনেক উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। গুম খুন আজ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ধর্ষণের ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে, ক্ষমতার আড়ালে এর বীভৎস চেহারা প্রতিনিয়ত ফুটে উঠছে। বিচারব্যবস্থার অবস্থাও তথৈবচ। রাষ্ট্রীয় যন্ত্র দ্বারা বিচার বহির্ভূত হত্যা স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হলেও এখন এটা মহামারির আকার ধারণ করেছে। নির্বাচন কমিশন সহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের মুখে। হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে যার দ্বারা আরো কয়েকটা পদ্মা সেতু করা সম্ভব হতো।
কয়েকটি স্থাপনা দিয়ে স্বাধীনতার সুফলকে পুঁজি করা যায় না। এর পিছনের সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র বারবার ভেসে ওঠে যা যৎসামান্য অর্জনকেও ম্লান করে দেয় এই অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এবং বাঙালী জাতীয়তাবাদ বিকাশে তৃতীয় জাগরণের পর্যায়ে অংশীদারিত্বমূলক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সভায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন উপলক্ষে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়।