চৌগাছায় ইসলামী ব্যাংক শাখায় গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ

মোঃ রুহুল আমিন,চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ

যশোরের চৌগাছায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ শাখায় গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাহকরা রীতিমতো ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে এ অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানান ঋণ নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করে সাধারণ গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। ব্যাংকের ভিতরে দীর্ঘ লাইন থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক কর্মকর্তাদের হেয়ালিপনা লক্ষ্য করা যায়। পরিচিত প্রভাবশালী গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে সাধারণ গ্রাহকদের লাইনে দাড় করিয়ে ঐসব প্রভাবশালী গ্রাহকদের চেক সরাসরি একাউন্টে নিয়ে গিয়ে টাকা উত্তোলন করতে দেখা গেছে।

সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগ, ব্যাংক ব্যবস্থাপক আজিজুর রহমান ব্যাংকে যোগদান করার পর থেকে এ হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। এছাড়া ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ঋণ প্রদান কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের অবহেলা ও কাজে গাফিলতির কারনে অনেক ব্যবসায়িরা ঋণ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তার এ ধরণের কর্মকান্ডের কারনে অনেকেই ইসলামী ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এসব বিষয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপককে জানালেও সাধারণ গ্রাহকদের তিনি কোনো পাত্তা দেন না। এছাড়া প্রায় সময়ই সাধারণ গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বাকবিতান্ডা হয়ে থাকে।

সিংহঝুলী গ্রামের শেফালি বেগম জানান, আমি ব্যাংকের আরডিএস প্রকল্পের একজন সদস্য। আমি ৩০ ডিসেম্বর কৃষি  কাজের জন্য ৪% লভ্যাংশে ঋণ নিতে যায়। প্রথমে তারা আমাকে ডিপিএসধারী গ্রান্টার নিয়ে যেতে বলেন। আমি দুইজন গ্রান্টার সাথে নিয়ে ব্যাংকে গেলে ব্যাংকের কর্মকর্তা ফায়েক আলী আমার ঋনের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করন। এর পরে ফাইলটি অনুমদোনের জন্য তিনি আরডিএস প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের নিকটে জমা দেন। কিন্তু প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, এবছর আর ৪% লভ্যাংশে ঋণ দেওয়া যাবেনা। এই বলে তিনি গ্রাহককে ফিরিয়ে দেন।

বেশ কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করেন, বর্তমান আরডিএস প্রকল্প কবর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ঋণ গ্রহিতাদের কাছ থেকে ব্যাক্তিগত সুবিধা নেন। যে  গ্রাহক এই কর্মকর্তাকে বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে ভূড়িভোজে ব্যার্থ হন তাদের ঋণের ফাইল আটকে রাখেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেন, শাখা ব্যবস্থাপকের অযোগ্যতার কারনে ব্যাংকের এই শাখাটি হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা গ্রাহকও হারাব , আস্তাও হারাব।

সাধারণ গ্রাহকদের দাবি, সুনামের সাথে পরিচালিত ব্যাংকটিতে যাতে সাধারণ গ্রাহকদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না করা হয়। এছাড়া গ্রাহক হয়রানি যেন তারা বন্ধ করেন। এজন্য সাধারন গ্রাহকরা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আরডিএস প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তার উপরে দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আজিজুর রহমানের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।