ভারতের করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জনস্বাস্থ্যের ইতিহাসে দুঃখজনক

সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরী করা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন রপ্তানিতে  নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার। এর অর্থ হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি বাধা নিষেধের জন্য অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোতে পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী COVID-19 ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে না। এর ফলে বাংলাদেশসহ অনেক দেশের জনগণের কাছে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন পৌঁছতে অন্তত ৪ থেকে ৫ মাস দেরি হবে, যা শুধু দুঃখজনকই নয় রাষ্ট্রীয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের ওপরও বড় ধরণের চপেটাঘাত। বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশ অথবা অন্য যেকোনো দেশ অরক্ষিত থাকলে মহামারীর প্রভাব অন্য সকল দেশের ওপরই পড়বে। প্রথম ধাক্কাটা সন্দেহাতীতভাবে নিকট প্রতিবেশীর ওপরেই আসবে। সুতরাং ভারত সরকারের সিদ্ধান্তটি যে আত্মঘাতী তাতেও সন্দেহের অবকাশ নাই।

আমি আরো এক পা এগিয়ে গিয়ে বলতে চাই, ভারত সরকারের ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত অমানবিক, অনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সাথে সাংঘর্ষিক। এই অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী COVID-19 নিয়ন্ত্রণে যে অনিশ্চয়তা নেমে আসলো তার দায় দায়িত্ব ভারতের বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে এবং সেটা ইতিহাসের পাতাতেও একটি কালো সিদ্ধান্ত হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে। আমার বিশ্বাস ভারতের অগুণিত চিন্তাশীল মানুষ ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধের এই জনস্বাস্থ্য বিরোধী সিদ্ধান্তের জন্য উদ্বিগ্ন এবং লজ্জিত।

ভারত এবং বিশ্বের সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভারত সরকার জনস্বাস্থ্য বিরোধী এই কালো সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবে সেই আশাই রাখছি।

(লেখক: বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা। লেখাটি ফেসবুক থেকে নেয়া)

Check Also

‘পাকিস্তান দলে প্রত্যেক ক্রিকেটারই অধিনায়ক’

টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে পেরে ওঠেনি পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচ পণ্ড হয়, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।