প্রধান মন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ এলাকাবাসির
সাতক্ষীরায় সরকারি অর্থ লুটে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ভাগ্য বদল
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা অনিয়ম, দূনীতিও স্বজনপ্রীতির অইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূনীতিও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। পৈত্রিক সূত্রে সামান্য জমির মালিক হলেও এখন চড়ে প্রাইভেট গাড়ী। কাড়ি কাড়ি টাকা আর মাছের ঘের এসব এখন তার হাতের মুঠোয়। খাস জমিতে বাগান বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। আর এঘটনায় সাতজন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ এলাকাবাসি প্রধানমন্ত্রী, দুদুক চেয়ারম্যানসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছে। তবে শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আগামি নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু লোকজন তার বিরোধিতা করছে।
এলাকাবাসির লিখিত অভিযোগে জানায়ায়, গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কোন কাজ না করে বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখিয়ে এডিপি ও এলজিএসপির টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছে। ৪০ দিনের কর্মসূচীতে টাকা নিয়ে লোক নিয়োগ দিয়েছে চেয়ারম্যান। সুবিধা নিয়ে ধনী লোকদের দিয়েছে ভিজিডি কাড।১০ টাকা কেজি দরের চাল পেয়েছে ধনী শ্রেণীর লোকেরা। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সম্মানি ভাতা দেয়নি সে। সরকারি খাস জমিতে তৈরি করেছেন বিলাস বহুলবাড়ি।এসব অনিয়মের তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন খোদ ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা।
শ্রীউলা ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের এ্যাডঃ জহুরুল হক,বুড়াখারহাটি গ্রামের মইনুর হোসেন,পুইজালা গ্রামের প্রভাষক দীপংকর বাছাড় জানান, ঠাকুর দাস, মানিক চক্রবতী, রাসেদ সরদার, রহিমা খাতুন অনেক জমির মালিক। তাদের আছে পাকা দালান বাড়ি। ভারতে বসবাসরত বিরেন্দ্র নাথ সানা। সরকারি চাকরিজীবি আব্দুল খালেক। এরকম অসংখ্যা লোকের নামে ১০ টাকা কেজি দরে চাউলের কার্ড দিয়েছে। অথচ দরিদ্র শ্রেণীর লোকজন সরকারি এসব সুযোগ সুবিধা পায়নি। তারা আরো জানান, পুইজালা গ্রামের রমেশচন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী কনিকা মন্ডলের টিপসই জাল দুই বছর ধরে ভিজিডি চাল উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যানও তার লোকজন।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম,আব্দুল হান্নান, দিবাকর সেন জানান, ৪০ দিন কর্মসূচীর কাজ ৩০দিনে শেষ করা হয়েছে। যাদের প্রকল্পের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়েছে তারা এসবের কোন কিছু খোজ রাখে না। তাদের সহি জাল করা হয়েছে। আবার এইসব শ্রমিক দিয়ে চেয়ারম্যান নিজস্ব ঘেরের ভেড়িবাধ ও বাগান বাড়িতে কাজ কওে নিয়েছে।একই শ্রমিক ৫ বছর ধরে এই কাজ করেছে। তারা আরো জানায়, এডিপিও এলজিএসপির আওতায় ভূয়া প্রকল্পের তালিকা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মজিদা খানম, অলিউল্লাহ, নাজমুল হুদা জানান, রয়ার সিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ২লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। আবার মহিষকুড়া বিজিএম ক্লাবের মাঠ ভরাট করা হয়েছে বলে ৩ বারে ২৪ টান চাউল উঠানো হয়েছে। বুড়াখারুিট ইয়াংক্লাব, কাকড়া বুনিয়া সবুজ সংঘ, শহিদ মিনার নির্মান, নাকতারা পাঞ্জেগানা সমজিদ সংস্কার করার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নিজের পকেট ভত্তি করেছে। সেখানে এই সব প্রতিষ্ঠানের কোন অস্থিত্ব নেই । বকচর ডিজিটাল রেডিয়েন্ট এন্ড ফ্রেন্ডশীপ ক্লাব সংস্কার করার কথা বলে একই প্রতিষ্ঠানের নামে ৩ বার টাকা উত্তোলন করেছেন। আর এসব প্রকল্পের বেশির ভাগ সভাপতি চেয়ারম্যান আর সেক্রেটারি তার গাড়িচালক আবদুল্লাহ আল মুামন ।
নির্বাচিত ইউপি সদস্যরা জানান, সম্মানি ভাতার টাকা পর্যন্ত পায়নি বলে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ।
শ্রীউলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম বুলু জানান, সে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। তবে তিনি দলের নেতা কর্মীদের কোন উপকার আসে না। সে ইউনিয়নে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ করিনি। সরকার উন্নয়ন করার জন্য যে বরাদ্ধ দিয়েছে সব তার পকেটে গেছে। ইউনিয়নের এমন অবস্থা রোগী নিয়ে বাড়ি থেকে যাওয়ার রাস্তা পর্যন্ত নেই। তিনি সব সময় জামায়াত বিএনপির লোক নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এখন তার আছে প্রাইভেট গাড়ি, মাছের ঘের, বাগান বাড়ি আর কাড়ি কাড়ি টাকা।
শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যানের আবু হেনা সাকিল জানান, নির্বাচন আসলে কিছু লোক বিরোধিতার স্বার্থে বিরোধিতা করে। এসব অভিযোগ মিথ্যা। অভিযোগের তদন্ত করলে সব বেড়িয়ে আসবে ।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, লিখিত অভিযোগ তারা পেয়েছেন। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …