ধর্ষণের পর হত্যার শিকার রাজধানীর ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সকাল ৭টায় তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদরের গোপালপুর গ্রামে জানাজা শেষে গোপালপুর গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
জানাজায় আনুশকার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী অংশ নেয়। তার দাফন শেষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার রাত ১টার দিকে স্কুলছাত্রীর লাশ ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে আসে। ভোর থেকেই শত শত মানুষ তাকে শেষবার দেখতে ভিড় করেন।
লাশ আসার পর স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা আল আমিন আহম্মেদ। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত ফারদিন ইফতেখার দিহানের কঠোর শাস্তিসহ এই ঘটনার সাথে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা থাকলে তদন্তপূর্বক তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর শাস্তির দাবি জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে এবং কেউ যাতে এমন অপরাধ করার সাহস না দেখায়, সে জন্য সব অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে ওই কিশোরীর বাবা মোঃ আল আমিন উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে আমার স্ত্রী ও আমি বের হয় হই। পরে আমার মেয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় তার মাকে ফোন দিয়ে বলে সে কোচিংয়ের পেপার্স আনতে বাইরে যাচ্ছে। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে দিহান আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে আমার মেয়ে তার বাসায় গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেছে। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী দুপুর ১টা ৫২ মিনিটের দিকে হাসপাতালে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারেন আমাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে।
পরে আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি দিহান আমার মেয়েকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। দিহান ফাঁকা বাসায় আমার মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় তার শরীর দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে অচেতন হয়ে যায়। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দিহান চালাকি করে আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন দিহান।