সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমানের ইন্তেকাল

মোঃ রাসেল হোসেন, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি,যশোরঃ

যশোরের বর্ষীয়ান রাজনীতিক সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটো মারা গেছেন।
রোববার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে প্রয়াতের মেজ ছেলে খালিদ হাসান জিউস জানিয়েছেন।

জিউস জানান, ৭৬ বছর বয়সী এ নেতাকে ফুসফুসে ইনফেকশনজনিত কারণে তিনদিন আগে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার সকাল ১০টার দিকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল।

তিনি জানান, সোমবার দুপুরে জোহরের নামাজের পর নগরের ঈদগাঁ ময়দানে তার বাবার জানাজা শেষে কারবালা কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।

১৯৬৩ সালে যশোর এমএম কলেজ ছাত্র ইউনিয়নে রাজনীতি হাতে খড়ি হয় তার। ‘৬৭ বাম ধারার শ্রমিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

১৯৯০ সালের মে মাসে এরশাদ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী হওয়া এই নেতা রাজনৈতিক জীবনের তিনি অনেক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ইপিসিপি (এমএল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী-ন্যাপ), গণতান্ত্রিক পার্টি, জাতীয় পার্টি, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগও করেছেন তিনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

এর আগে বিএনপিতে যোগ দিলেও সদর আসনে দল প্রার্থী না করায় সেই দল থেকে নির্বাচন করেননি বলেন তার ছেলে জিউস।

১৯৭৪ সাল থেকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী-ন্যাপ) করা এ নেতা ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ন্যাপের পক্ষ থেকে জিয়াউর রহমানকে সমর্থন দিয়েছিলেন। পরে ১৯৮১ সালে ‘গণতান্ত্রিক পার্টি’ গঠিত হলে এর স্টান্ডিং কমিটির সদস্য হন।

১৯৮৪ সালে যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ৮৬ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৭ সালে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েওছিলেন।

১৯৯১ সালের পর জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা ৯৬ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন।

খালেদুর রহমান টিটো ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হবিবুর রহমান আইনজীবী ছিলেন।

সাত ভাইবোনের মধ্যে টিটো দ্বিতীয়। টিটোর শিক্ষাজীবন শুরু হয় যশোর জিলা স্কুলে। ১৯৬০ সালে এখান থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকার কায়েদে আজম কলেজ হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে কারাগারে অবস্থানকালে যশোর এমএম কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হলেও রাজনৈতিক কারণে পড়া শেষ করতে পারেননি।

১৯৭২ সালের ১৮ মে যশোর শহরের চুটিপট্টির মেয়ে রওশন আরা বেগমের সঙ্গে সংসার জীবন শুরু করেছিলেন টিটো। তাদের তিন ছেলে। ২০০৭ সালে স্ত্রী রওশন মারা যান।

এ নেতার তার বড়ভাই মাসুকুর রহমান তোজোকে ১৯৭১ সালে রাজাকার বাহিনী নৃশংসভাবে খুন করেছিল।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।